ঘাসে অতিরিক্ত নাইট্রেটের উপস্থিতি ও মিশ্র ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে গাজীপুর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ১১টি জেব্রার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে তদন্ত কমিটি। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিবেশ ও বনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ঘাসে অতিরিক্ত নাইট্রেটের উপস্থিতি ও মিশ্র ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে ১১টি জেব্রার মৃত্যু হয়েছে বলে তদন্তে পাওয়া গেছে। সাফারি পার্কে প্রাণীগুলোকে যে ঘাস দেওয়া হয়, সেটার মধ্যে অতিরিক্ত নাইট্রেটের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এ কারণেই জেব্রাগুলো মারা গেছে। সাধারণত ঘাসে ইউরিয়া সার দেওয়া হয়। এটা ছিটানোর পরপর পশুকে খেতে দেওয়া হলে এমনটি হতে পারে। সার ছিটানোর নির্দিষ্ট সময় পর পশুদের ঘাস খেতে দেওয়া হয়। সেটা তিন বা চার সপ্তাহ পর খেতে দিতে হয়। এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে দেওয়া হলে এ রকম হতে পারে।
তিনি বলেন, প্রথমে যে তিনটি জেব্রার মৃত্যু হয়েছিল, সেগুলোর প্রকৃত কারণ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।তারা জেব্রাগুলোর মৃত্যু আঘাতজনিত কারণে হয়েছে, এ মিথ্যা প্রতিষ্ঠা করার জন্য মৃত তিনটি জেব্রার পেট ধারালো কিছু দিয়ে কেটে দেয়। যা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে আরও গভীর তদন্তের পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, সাফারি পার্কে কর্তব্যরত ভেটেরিনারি অফিসারের চাহিদা মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাফারি পার্ক মেডিকেল বোর্ডের সভা আহ্বান করবেন মর্মে বিধান থাকলেও এতগুলো জেব্রার অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরও জরুরিভিত্তিতে মেডিকেল বোর্ডের সভা আহ্বান করা হয়নি। যা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতার শামিল।
মন্ত্রী বলেন, কোনো প্রাণীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় জিডি করার প্রচলন থাকলেও এ ক্ষেত্রে থানায় কোনো জিডি করা হয়নি, যা রহস্যজনক। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব গত ২২ জানুয়ারি সাফারি পার্ক পরিদর্শন করেন। সে দিন পর্যন্ত ৮টি জেব্রা মারা গেলেও প্রকল্প পরিচালক, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ভেটেরিনারি কর্মকর্তা বা কর্মরত অন্য কেউ জেব্রার মৃত্যুর ঘটনাটি সচিবকে অবহিত করেননি। এতে প্রতীয়মান হয় প্রথম থেকেই জেব্রার মৃত্যুর ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে।