তুরস্ক সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে গ্রিসে যাওয়ার সময় নিখোঁজ বাংলাদেশি যুবক আমিন উল্লাহ সুমনের (২৬) মৃত্যু হয়েছে। তীব্র শীতে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিষয়টি জানা যায়।
আমিন উল্লাহ সুমন ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের চরশাহাভিকারী গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। দুই ভাই, দুই বোনের মধ্যে সুমন ছিল সবার ছোট।
চরচান্দিয়া ইউনিয়নের পূর্ববড়ধলী গ্রামের আব্দুর রহমান ইস্তাম্বুলের হাসপাতালে সুমনের মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে তিনি গ্রিসে অবস্থানরত সুমনের ভাই সাইফুল ইসলামকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি তিনি গ্রিস যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন।
গ্রিসে থাকা সুমনের ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, “গত ৩১ জানুয়ারি ২০ জনের সঙ্গে গ্রিসে যাওয়ার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সুমন। গ্রিসের পুলিশ তাদের দুইদিন আটক রেখে পুনরায় তুরস্কে পাঠায়। তুরস্কে ফেরার সময় প্রচণ্ড শীতে সুমনসহ আরও কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদের ইস্তাম্বুলের হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে সোমবার সুমনের মৃত্যুর কথা জানতে পারি।”
সুমনের বড় বোন নাসিমা আক্তার বলেন, “২০১০ সালে সোনাগাজীর চরশাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে সুমন। জীবিকার তাগিদে ২০২১ সালে সে দেশ ছেড়ে ওমান চলে যায়। ৬ মাস ওমানের থাকার পর সেখান থেকে এক দালালের মাধ্যমে ইরাক চলে যায় সে। আরেক দালালের মাধ্যমে ইরাক থেকে তুরস্ক চলে যায়। পরবর্তীতে সিলেটের হবিগঞ্জের এক দালালের সঙ্গে ৩ লাখ টাকা চুক্তি করে তুরস্ক সীমান্ত পাড়ি দিয়ে একাধিকবার গ্রিসে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।”
তিনি আরও বলেন, “গত ৩১ জানুয়ারি সে আমাদের জানিয়ে চতুর্থবারের মতো গ্রিসে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরপর থেকে আমরা তার আর কোনো খোঁজ পাচ্ছিলাম না। এর মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যুর খবর জানতে পারি।”
নাসিমা আক্তার বলেন, “সুমনের মৃত্যুর খবর জানাজানি হওয়ার পর তার পরিবারে শোকের মাতম চলছে। সুমনের পরিবারে স্ত্রী ও ৫ বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বামীকে হারিয়ে তার স্ত্রী ও কন্যা সন্তান বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। প্রতিবেশীরা তাদের সান্ত্বনা দিয়েও কান্না থামাতে পারছেন না।”