ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে (এনবিএফআই) ‘ব্যাংকার বহি সাক্ষ্য আইন-২০২১’ পরিপালনের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, অনুমতি ছাড়া কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে গ্রাহকের তথ্য দিতে পারবে না আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ব্যাংক বা তাদের অনুমোদিত বা নিযুক্ত কোনও ব্যক্তি, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ মানি লন্ডারিং অপরাধে তদন্তকারী যে কোনও সংস্থা চাইলে গ্রাহকের তথ্য নিতে পারবে। এছাড়া ব্যাংককে সেবা দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ আইনজীবী, পরামর্শক বা উপদেষ্টা ছাড়া অন্য কারও কাছে তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। আইনে আউটসোর্সিং ব্যবস্থার আওতায় ব্যাংকিং বা অনুষঙ্গ কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সীমিত আকারে তথ্য প্রকাশ করা যাবে।
ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়, এমন কোনও সেবাদানকারী তৃতীয় পক্ষের কাছেও তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। এক্ষেত্রে কোনও গ্রাহকের আমানতের তথ্য প্রকাশ করতে হলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের সম্মতি নিতে হবে। ঋণের তথ্য প্রকাশের আগে গ্রাহককে এ বিষয়ে জানাতে হবে।
সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, গত ২৭ নভেম্বর জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘ব্যাংকার বহি সাক্ষ্য আইন-২০২১’ গত ৭ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকের লেজার বুক ও ক্যাশ বুকের মতো নথিকে আইনের ভাষায় ‘সাক্ষ্য বহি’ বলা হয়। বিলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে যেসব রেকর্ড হবে সেগুলোও ‘সাক্ষ্য বহি’ হিসেবে বিবেচিত হবে। ব্যাংকগুলোর লেজার বুক, ক্যাশ বুক, লোন ডেসপাস বুক যা আছে- সবই এর অন্তর্ভুক্ত।
‘ব্যাংকার বহি সাক্ষ্য আইন-২০২১’ অনুযায়ী, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কোনও কর্মকর্তা বা কর্মচারী অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারও কাছে গ্রাহকের কোনও তথ্য প্রকাশ করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংকের মতো এনবিএফআইয়ের কোনও কর্মকর্তা বা কর্মচারী অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কারও কাছে কোনও গ্রাহকের তথ্য প্রকাশ করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। তবে এ আইনের অধীন অপরাধ অ-আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য ও আদালতের সম্মতিতে আপসযোগ্য হবে বলে বিধান রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে এ নির্দেশনা পাঠিয়েছে।
এর আগে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য একই নির্দেশনা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।