ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকিতে থাকা প্রাপ্তবয়স্কদের চিকিৎসায় ফাইজারের তৈরি করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ট্যাবলেট খাওয়ার অনুমতি দিয়েছে ইউরোপের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ইএমএ)। এর ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে কোভিডের চিকিৎসায় প্রথমবারের মতো ট্যাবলেট ব্যবহার হতে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ফাইজারের প্যাক্সলোভিড ট্যাবলেট ব্যবহারের অনুমোদনের কথা জানায় ফাইজার।ইতোমধ্যে ইতালি, জার্মানি এবং বেলজিয়ামের মতো ইইউভুক্ত দেশগুলো প্যাক্সলোভিড ব্র্যান্ডের ট্যাবলেটটি কিনে নিয়েছে।
কোভিড প্রতিরোধের চিকিৎসায় প্যাক্সলোভিডের কার্যকারিতা ও যুগান্তকারী পরিবর্তনের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে ইইউয়ের স্বাস্থ্য কমিশনার স্টেলা কিরিয়াকিডেস বলেন, বাড়িতে চিকিৎসার জন্য প্রথমবারের মতো আমরা কোনো অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেটের অনুমোদন দিলাম। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের চিকিৎসায় এটি বিরাট পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বরে ফাইজারের প্যাক্সলোভিড এবং মার্কের মলনুপিরাভির ট্যাবলেটের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
তবে ফাইজারের প্যাক্সলোভিডকে অনুমোদন দিলেও মার্কের মলনুপিরাভির ব্যবহারের অনুমোদন এখনও দেয়নি ইইউ। কারণ গত নভেম্বরে প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের তৈরি ওষুধের ট্রায়াল সংক্রান্ত তথ্যে সংশোধন এনে জানায়, কোভিডর চিকিৎসায় ওষুধটিকে যতটা কার্যকর হিসেবে ধারণা করা হয়েছিল, সেটি আসলে ততটা কার্যকর নয়।
ফাইজারের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্যানুযায়ী, গুরুতর অসুস্থতার উচ্চঝুঁকিতে থাকা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু প্রতিরোধে অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেট “প্যাক্সলোভিড” ৯০% কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। সেই সঙ্গে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধেও ওষুধটি তার কার্যকারিতা অক্ষুণ্ণ রেখেছে বলে জানা গিয়েছে।
যদিও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালটি শুধুমাত্র টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের ওপর চালানো হয়েছিল। ফলে টিকা নেওয়া উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের চিকিৎসায় এটি কতটুক কার্যকর হবে সে প্রশ্নও উঠেছিল। যদিও ইএমএ টিকার আওতায় থাকা বা না থাকা সব গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকিতে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের চিকিৎসায় এ ট্যাঁবলেট ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে ফাইজারের প্রধান নির্বাহী আলবার্ট বোরলা বলেন, “ইউরোপে প্যাক্সলোভিড ট্যাবলেট ব্যবহারের অনুমোদন আমরা গর্বিত। এ অনুমোদন বিশ্বব্যাপী প্যাক্সলোভিডের ১২ কোটি কোর্সের উৎপাদনে ভূমিকা রাখবে।”