প্রয়োজনীয় সংখ্যক দক্ষ টেকনিক্যাল জনবল না থাকায় এবং সময় স্বল্পতার কারণে জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু ভুল-ভ্রান্তি রয়ে গেছে, যার অধিকাংশই বানানজনিত ভুল বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারীর প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
আইনমন্ত্রী বলেন, ২০০৭-০৮ সালে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে এবং সশস্ত্র বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের সার্বিক সহযোগিতায় নাগরিকদের বায়োমেট্রিক্স সংগ্রহ করে জাতীয়ভাবে ভোটার ডাটাবেজ গড়ে তোলা হয়। বিভিন্ন পর্যায়ে জাতীয় তথ্যভাণ্ডারে পরিলক্ষিত ভুলগুলোর বিষয়ে আইন ও বিধি অনুসারে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সংশোধনের সুযোগ প্রদান করা হলেও বিভিন্ন কারণে অনেকেই যথাসময়ে ওই সুযোগ গ্রহণ করেননি। বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুতের ক্ষেত্রে দেশের নাগরিকরা সচেতন হওয়ায় ভুলের পরিমাণ তুলনামূলক কম।
আইনমন্ত্রী বলেন, ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুতের সব ক্ষেত্রে ভোটারের নিবন্ধন ফরম কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এতে দেখা গেছে, এনআইডি সঠিকভাবেই মুদ্রিত হয়েছে। অপরদিকে সংশোধনের জন্য প্রাপ্ত আবেদনের অধিকাংশই সংশোধনের চাহিদা অনুযায়ী যুক্তিসঙ্গত নয়। এসব আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে যথাযথ প্রমাণপত্র দলিলাদি দাখিলসহ ক্ষেত্রবিশেষ তদন্ত বা পুনঃতদন্তের প্রয়োজন পড়ে। এসব আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কিছুটা বেশি সময় লাগে।
মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচন কর্মকর্তাদের এ সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে একটি অত্যাধুনিক অনলাইন কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করা হয়েছে (www.services.nidw.gov.bd)। পাশাপাশি অফলাইন ব্যবস্থাও চালু রয়েছে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, অনলাইন ব্যবস্থা চালুকরণের ফলে আবেদনকারী ঘরে বসেই তার এনআইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন করতে সক্ষম হচ্ছেন এবং আবেদন কোন পর্যায়ে রয়েছে সেটিও ট্র্যাকিং করতে পারছেন। এনআইডি সংশোধনের আবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর সংশোধিত কার্ডটি অনলাইনে ডাউনলোড করার মাধ্যমে নিয়েই প্রিন্ট করতে সক্ষম হচ্ছেন। আবেদনকারী সশরীরে সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসে গেলেও আবেদন গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
দ্রুত আবেদন নিষ্পত্তির জন্য সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবাকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সীমিত না রেখে বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। এনআইডি উইংয়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মাঠপর্যায়ের নির্বাচন অফিসগুলোর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদেরও আবেদনের ধরন অনুসারে আবেদন নিষ্পত্তিকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে।