কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে পর্যটক নারীকে ধর্ষণের ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার সামনে এলো হোটেলে দুই দিন ধরে আটকে রেখে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের লোমহর্ষক কাহিনি। এই ঘটনায় থানায় মামলা হলেও পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
জানা গেছে, কলাতলীর মামস্ হোটেলে দুই দিন ধরে আটকে রেখে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। মামলা করার দেড় সপ্তাহেও ধরা পড়েনি অভিযুক্ত। গত ১৩ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যটন এলাকা কলাতলীর ওই হোটেলে আটকে রেখে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনার পর ১৫ ডিসেম্বর রাতে একটি সিএনজিতে করে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়।
এদিকে বাড়িতে পৌঁছে ওই পাশবিক নির্যাতনের বর্ণনা দেয় ছাত্রীটি। এ ঘটনায় ১৮ ডিসেম্বর পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হলেও এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। মামলা তুলে নিতে অভিযুক্তরা উল্টো হুমকি দিচ্ছে বলে জানিয়েছে মামলার বাদী ও ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর পরিবার।
যেভাবে ধর্ষিত হয়: ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার ছাত্রী (১৩) জানায়, পরীক্ষার ফল জেনে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে উত্তর নুনিয়ারছড়ার আশিকের নেতৃত্বে তার সহযোগী কয়েকজন তাকে অপহরণ ও মামস্ হোটেলে নিয়ে ধর্ষণ করে। কক্সবাজারে কলাতলী রোডের মামস্ আবাসিক হোটেলে ওই স্কুলছাত্রীকে দুই দিন জিম্মি করে ধর্ষণ করেছে। ধরা পড়ার ভয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ মুছে ফেলেছে ওই দিনের সিসিটিভি ফুটেজ।
ধর্ষণের অভিযোগে মামলা: কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসা নেওয়ার পর ১৮ ডিসেম্বর ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলা পর নয় দিন অতিবাহিত হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মামস্ আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার গণমাধ্যমে জানান, ১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এই নামে কেউ তাদের হোটেলে ছিল না। হোটেলটিতে সিসিটিভি থাকলেও ওই তারিখের ফুটেজ ডিলিট হয়ে গেছে বলে জানান হোটেলটির ম্যানেজার।
আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না জানিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, মামলার তদন্ত অব্যাহত ও তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে গত ২২ ডিসেম্বর রাতে কক্সবাজারে গণধর্ষণের শিকার হন এক পর্যটক নারী। আলোচিত ধর্ষণ মামলার প্রধান অভিযুক্ত মাদারীপুর থেকে রবিবার রাতে গ্রেপ্তার করে এলিট ফোর্স র্যাব। সোমবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ব্লাইমেইলের মাধ্যমে পর্যটকদের জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়াই ছিল গ্রেপ্তার আশিকুল ইসলাম আশিকের অন্যতম পেশা। স্থানীয় লাইটহাউজে বসে সে এসব কাজ চালাতো। এছাড়া স্থানীয় মাদক ব্যবসা, অস্ত্র কারবার ছাড়াও চুরি ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ছিল। এসব অভিযোগে বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে ১২টি মামলা হয়। এসব মামলায় সে পাঁচবার গ্রেপ্তার হয়।