জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দেশের কাউকে দরিদ্র থাকবে দেব না, সবাই উন্নত-সমৃদ্ধ জীবন পাবে।
সোমবার বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ডিপ্লোম্যাটিক এক্সিলেন্স পুরস্কার-২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাবেক রাষ্ট্রদূত সাইদ মোহাম্মদ আল মেহরি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. খুরশেদ আলম (অব:) এবার এ পদক পান। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন পদক তুলে দেন।
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। তার লক্ষ্য ও আদর্শ ছিলো সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে এই নীতি অনুসরণ করে যাচ্ছি। আমাদের সরকারের আমলে দেশের আর্থ-সামাজিক খাতে যেমন উন্নয়ন হচ্ছে। ঠিক তেমনি প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে যাচ্ছি। তাছাড়া আমরা সমগ্র বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে অবদান রেখে যাচ্ছি।
সরকারপ্রধান বলেন, মিয়ানমারের নির্যাতনে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। আমি আশাকরি বিশ্বের সকল মানুষের শান্তি ও মানবাধিকার যেন রক্ষা পায়। এক্ষেত্রে আমরা সকলের সহযোগিতা কামনা করি।
বাংলাদেশ সমৃদ্ধ ও উন্নীতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। এটা আমাদের নীতি ও আদর্শ। জাতির পিতা আমাদের যে আদর্শ ও সংবিধান দিয়ে গেছেন। সেখানে আমাদের যে চার মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। সেই নীতি মেনেই দেশের উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষকে আর দরিদ্র থাকতে দেব না। দেশের মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত হবে। উন্নত, সমৃদ্ধ জীবন পাবে। জাতির পিতার সেই পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। আদর্শ ধারণ করছি। স্বাধীনতার লক্ষ্য ও আদর্শ অর্জন করার জন্য আমরা ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
‘মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ফসল প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছাবে। দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ও উন্নত জীবন পাবে। এটাই ছিলো জাতির পিতার লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। এটাই আমাদের বড় অর্জন। আমরা বাংলাদেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি আমরা অর্জন করবো ২০৩০ সালে মধ্যে। পাশাপাশি আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার জন্মদিনে কোনো বই কিংবা আমার কোনো চাওয়া পাওয়া নাই। আমি কিছুই চাই না। আমার জন্য কিছু করা হোক এটাও আমার কামনা না। কারণ আমি জাতির পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোঁটাবার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করেছি। আমার কোনো চাওয়া পাওয়া নেই। কারণ আমিতো আমার বাবা, মা, ভাই সব হারিয়েছি।
তিনি বলেন, আমি একটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যত কষ্ট, আঘাত, বাধা আসুক না কেন। যে স্বপ্ন নিয়ে আমার বাবা এই দেশ স্বাধীন করেছে। তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই হবে। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত। দারিদ্র ও মঙ্গা বলতে দেশে কিছু থাকবে না। দেশের প্রতিটি মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে এবং উন্নত জীবন পাবে। সেটাই আমার লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য স্থির রেখেই আমার পথ চলা। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। ইনশাআল্লাহ একদিন উন্নত দেশ হিসাবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।