উইকেট যা পড়ার প্রথম সেশনেই পড়বে, লাঞ্চের আগের সময়টা পার করে দিতে পারলে আর চিন্তা নেই! চট্টগ্রাম টেস্টের দুই দিনে ঠিক একই ঘটনা ঘটলো। প্রথম দিনে প্রথম সেশনে ৪ উইকেট পড়েছিল, দ্বিতীয় দিনে পড়লো ৬ উইকেট। দুই দিনের বাকি চার সেশনে উইকেটের ঘর শূন্য। আর এই হিসাবটাই হতাশায় পোড়ালো বাংলাদেশকে। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তান দুই সেশন পার করে দিয়েছে কোনও উইকেট না হারিয়ে।
আজ (শনিবার) জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিবর্ণ এক দিন পার করলো বাংলাদেশ। প্রথমে ৭৭ রানে তুলতে শেষ ৬ উইকেট হারালো, এরপর বোলিংয়ে পুরো দুটো সেশন চেষ্টা করেও উইকেটের দেখা পায়নি মুমিনুল হকরা। বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে পাকিস্তান দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ৫৭ ওভারে কোনও উইকেট না হারিয়ে ১৪৫ রানে। প্রথম ইনিংসে ৩৩০ রানে অলআউট হওয়া বাংলাদেশ থেকে তারা এখনও পিছিয়ে ১৮৫ রানে।
৫৭ ওভার বল করেও একটি উইকেট নিতে পারেননি তাইজুল ইসলাম-এবাদত হোসেনরা। তাদের শাসন করে পাকিস্তান দুই ওপেনার আবিদ আলী ও আব্দুল্লাহ শফিক দাপট দেখিয়ে চলেছেন। হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে সেঞ্চুরির পথে আবিদ। ৯৩ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন এই ব্যাটার। ১৮০ বলের হার না মানা ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৯ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায়। টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে এখন তৃতীয় সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় আবিদ।
আব্দুল্লাহ নেমেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলতে। অভিষেকেই নিজের সামর্থ্যের ছাপ রাখলেন তিনি। সত্যিকার টেস্ট মেজাজে ব্যাট করে পেয়ে গেছেন প্রথম হাফসেঞ্চুরি। দিন শেষে তিনি অপরাজিত ৫২ রানে। ১৬২ বলের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ২ চার ও সমান ছক্কায়।
একটি উইকেটের খোঁজে ওভারের পর ওভার বল করেছে বাংলাদেশ। কাঙ্ক্ষিত সাফল্য শুরুতেই এসে যেতো যদি রিভিউ নেওয়া হতো! তাইজুল ইসলামের বলে জোরালো আবেদন উঠেছিল, কিন্তু প্রথমে ব্যাটে আঘাত করেছে ভেবেই হয়তো রিভিউ নেয়নি বাংলাদেশ। যদিও রিপ্লেতে দেখা যায় আব্দুল্লাহ শফিকের প্যাডে আগে আঘাত করেছে লাইনে থাকা বল। তাই বাংলাদেশের উইকেট পাওয়া হয়নি, সমান্তরালে দুই ওপেনার আবিদ ও আব্দুল্লাহর ব্যাটে দারুণভাবে এগিয়ে চলেছে পাকিস্তান।
যেহেতু কোনও উইকেট নেই, স্বভাবতই কোনও সাফল্য নেই বাংলাদেশের বোলারদের। তাইজুল ১৯ ওভারে খরচ করেছেন ৩৯ রান। মেহেদী হাসান মিরাজ ১৩ ওভারে দিয়েছেন ৩৩ রান। এবাদত ১২ ওভারে ৩১, আবু জায়েদ রাহী ১০ ওভারে ৩০ ও মুমিনুল হক ৩ ওভারে খরচ করেছেন ১২ রান।
বাংলাদেশের ৩৩০
প্রথম দিনের দুই সেশন যেভাবে কেটেছিল, তাতে দারুণ কিছুর পূর্বাভাস ছিল দ্বিতীয় দিনে। কিন্তু ঘটলো ঠিক উল্টোটা। লাঞ্চের আগেই অলআউট বাংলাদেশ! দ্বিতীয় দিনে ৭৭ রান যোগ করতে হারিয়েছে শেষ ৬ উইকেট। ফলে প্রথম ইনিংসে মুমিনুল হকরা অলআউট হয়েছে ৩৩০ রানে।