স্ত্রী রোজ তাঁর স্বামীকে অফিসে নিয়ে যাওয়ার জন্য টিফিন বানিয়ে দিতেন। স্বামী সেই টিফিন নিয়েও যেতেন এবং সেই টিফিন কৌটো রোজ খালি করেই নিয়ে আসতেন।
স্ত্রী মাঝে মাঝেই এমন খাবার বানাতেন যে তিনি নিজেও সেটা মুখে বলতে পারতেন না। অথচ স্বামী কখনও কোনও দিনও সেই খাবার নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করতেন না। তাই স্ত্রী-র একটু সন্দেহ হয়, স্বামীকে যাই অখাদ্য-কুখাদ্য বানিয়ে দিই না কেন, বাড়িতে ফিরে এসে তিনি কোনও অভিযোগ করেন না কেন!
যাতে তিতিবিরক্ত হয়ে উনি কিছু বলেন, সে জন্য এর পর থেকে তিনি খাবারে কোনও দিন লবণ বেশি দিয়ে দিতেন, কোনও দিন প্রচন্ড ঝাল, আবার কোনও দিন এমন ভাবে রান্না করতেন যে, তাতে কোনও স্বাদই হত না। তবুও স্বামী নিশ্চুপ।
তাই অফিসে যাওয়ার জন্য স্বামী বাড়ি থেকে বেরোতেই তিনি একদিন তাঁর পিছু নিলেন। এবং দেখলেন, অফিসে খাবার নাম করে নিয়ে এলেও, তাঁর স্বামী অফিসের ঢোকার আগেই একটি মন্দিরের সামনে বসে থাকা এক ভিখারিকে পাত্রে টিফিন কৌটো উপুড় করে সব খাবার ঢেলে দিলেন।
স্বামী চলে যেতেই ওই ভিখারিটির কাছে গিয়ে স্ত্রী জানতে পারলেন, এই লোকটা নাকি অফিস যাবার পথে রোজই তাঁকে এই ভাবে খাবার দিয়ে যান।
কথা বলতে বলতে আচমকাই ভিখারিটি এই মহিলাটিকে চিনতে পেরে যান। জিজ্ঞেস করেন, কেমন আছ?
— মানে? আপনি কে? ভিখারিটি কোনও উত্তর না দিয়ে তাঁকে ছোটবেলার দু’-তিনটে শায়েরি শোনান। আর সেই শায়েরি শুনেই মহিলাটি চিনতে পেরে যান এই ভিখারিটিকে। বুঝতে পারেন, ওড়িশার জবলপুরে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া এই-ই তাঁর সেই পুরনো প্রেমিক— প্রকাশ।
ছোটবেলায় তাঁরা একে অপরকে পাগলের মতো ভালবাসতেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। আর সে জন্যই এর এখন এই দুরবস্থা।
এর ঠিক দু’দিন পরেই এই মহিলাটি তাঁর স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে, ভরা সংসার এবং নিশ্চিন্ত জীবন ছেড়ে এক কাপড়ে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। বিয়ে করেন ওই ভিখারিকে। এখন তাঁরা দু’জনে মিলে মন্দিরের বাইরে বসে একসঙ্গে ভিক্ষা করেন।
এই খবর চাউর হয়ে যাওয়ার পরে শুধু মন্দির নয়, মন্দিরে ঢোকার মুখেই লোকজনের কাছে আরও একটি দর্শনীয় দৃশ্য হয়ে উঠেছে এই জুটি।