গত ১ সেপ্টেম্বর দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এরপর থেকে গত আড়াই মাস ধরে রিজার্ভ আর বাড়ছে না। উল্টো কমছে। বর্তমানে সেই রিজার্ভ এসে দাঁড়িয়েছে ৪৪ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ গত আড়াই মাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৪৯৫ কোটি ডলার।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রফতানি আয় বাড়লেও অস্বাভাবিকভাবে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে, অন্যদিকে অস্বাভাবিকভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। যে কারণে ডলারের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও চাপ পড়েছে।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকতে হয়।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ইতিহাসে গত ২৪ আগস্ট প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন রেকর্ড ছুঁয়ে যায়। ৮ সেপ্টেম্বরে এই রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৪৬ বিলিয়ন ডলারে। সর্বশেষ ১৭ নভেম্বর এই রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন ডলারের নেমে আসে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ড. জায়েদ বখত বলেন, রফতানি আয় বাড়লেও অস্বাভাবিকভাবে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। এছাড়া রেমিট্যান্স প্রবাহে কিছুটা ধাক্কা লেগেছে। যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগের মতো বাড়ছে না। তবে রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কারণ, তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ এখনও আছে। বর্তমানে ৪৪ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ রয়েছে। এটা দেশের অর্থনীতি যে শক্তিশালী তার ইঙ্গিত করে।
অবশ্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এর আগে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৫০ বিলিয়ন বা ৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই আমদানি ব্যয়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় এই বছরের সেপ্টেম্বরে আমদানি বেড়েছে ৫০ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এই তিন মাসে আমদানি ব্যয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৪৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ।