মাটি খুঁড়ে পাওয়া পিতলের একটি কলসি থেকে উদ্ধার হল রুপোর প্রাচীন মুদ্রা। ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডি থানার এক নম্বর আকচা গ্রাম পঞ্চায়েতের পরমেশ্বরপুর গ্রামের এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
খবর পেয়ে লুট হওয়ার হাত থেকে ওই কলসি ও কিছু মুদ্রা উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিছু দিন আগে বাবাকে নিয়ে কুশমণ্ডির পরমেশ্বরপুর গ্রামে দিদির বাড়িতে ঘুরতে আসে নদিয়া জেলার বিশাল বৈশ্য। তার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্র তার জামাইবাবু রামধন সরকারের সঙ্গে গ্রামের জলাতে যেত। মাঠ থেকে কাটা পাটগাছ জলে ভিজিয়ে দিয়ে ফের ফিরে আসত দিদির বাড়ি। সে দিনও একই কাজ করতে গিয়েছিল সে। কিন্তু হঠাৎই জলাতে পাটগাছ ভেজাতে যাওয়ার সময় পাশে একটি উঁচু জায়গায় নজর যায় তার। তার পর সেখানে কিছু একটা আছে মনে করে জায়গাটা সে খুঁড়তে শুরু করে। কিছুক্ষণ খোঁড়ার পরেই পিতলের একটি কলসি বেরিয়ে আসে।।
কলসিটির সারা গায়ে মাটি লেগেছিল। তাই প্রথমে মনে হয়েছিল মাটির কলসি। বেশ খানিকটা ভারীও ছিল। বোঝা যাচ্ছিল ভিতরে কিছু একটা আছে। কিন্তু কী আছে, সেটা দেখার জন্যেই ওই কলসটি কোনও রকমে তুলে সামনের একটি গাছের গুঁড়িতে সে ছুড়ে মারে। সঙ্গে সঙ্গে কলসিটি ভেঙে বেরিয়ে আসে অসংখ্য প্রাচীন রুপোর মুদ্রা। বিষয়টি চোখে পড়তেই এগিয়ে আসে স্থানীয় লোকজন। যে যেমন পারে লুঠপাট করে পালায়। মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে খবর। এটা নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই পুলিশ এসে ওই কলসি এবং যে ক’টি মুদ্রা অবশিষ্ট ছিল সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বিশাল নামের ওই কিশোরটিকেও। বিশাল বলে, বেশ কিছু দিন ধরে রাতে এক বৃদ্ধ তাকে স্বপ্নাদেশ দিচ্ছিলেন। বলছিলেন, ওই জলার ধারে একটি কলসি আছে। সেটি নিয়ে যেতে।
সে জামাইবাবুর সঙ্গে আজ যখন পাটগাছ ভেজাতে জলায় গিয়েছিল, সেই সময় আচমকা চোখ যায় সামনের একটি উঁচু ঢিবির দিকে। আর তখনই তার মনে পড়ে যায় স্বপ্নে দেখা সেই আদেশের কথা। এর পরেই মাটি খুঁড়তে শুরু করে সে। তখনই বেরিয়ে আসে কলসি। সেটাকে মাটির কলসি ভেবে পাশের একটি গাছের গুঁড়িতে ছুড়ে মারে। আর তখনই কলসিটা ফেটে গিয়ে তার ভিতর থেকে রুপোর এই মুদ্রাগুলো বাইরে বেরিয়ে আসে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই কলসির মধ্যে থেকে মোট ৪৬টি রুপোর কয়েন উদ্ধার করা গেছে। আরও অনেক কয়েন ছিল। আমরা যাওয়ার আগেই ঐতিহাসিক এই প্রাচীন মুদ্রাগুলো লোপাট হয়ে যায়। আমরা সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করছি।