বাংলাদেশসহ বিশ্বের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ৯৫টি দেশে ফাইজারের মুখে খাওয়ার করোনার ওষুধ প্যাক্সলোভিডের জেনেরিক উৎপাদনের বিষয়টি অনুমোদন পেয়েছে। এসব দেশ ফাইজারের করোনার বড়ি তৈরি ও বিক্রি করতে পারবে।
মঙ্গলবার জাতিসংঘভিত্তিক আন্তর্জাতিক পেটেন্ট সংস্থা মেডিসিন পেটেন্ট পুলের (এমপিপি) সঙ্গে এ বিষয়ে ফাইজার কর্তৃপক্ষ চুক্তি করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিটি আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য গোষ্ঠী মেডিসিন্স প্যাটেন্ট পুলের (এমপিপি) সঙ্গে লাইসেন্স ভাগাভাগির আওতায় এ ঘোষণা দেয়। এর আগে ফাইজারের প্রতিদ্বন্দ্বী মার্ক অ্যান্ড কো. একই প্রক্রিয়ায় জেনেরিক ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ তৈরির লাইসেন্স দেয়। ওষুধটি বাংলাদেশসহ ১০৫টি দেশের কোম্পানি তৈরি করে বাজারেও এনেছে।
নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে ওষুধটি বিক্রিতে রয়্যালটি নেবে না ফাইজার। সে হিসেবে বাংলাদেশ অনেক কম দামে পাবে ওষুধটি। তবে চুক্তির আওতায় অন্য দেশগুলোও রয়্যালটি ছাড় পাবে। বিশেষ করে যতদিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ঘোষণা অনুযায়ী কোভিড-১৯ ‘জনস্বাস্থ্য জরুরি’ পরিস্থিতি হিসেবে শ্রেণিভুক্ত থাকবে।
ফাইজার বলছে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগে তার এই পিল মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকা প্রাপ্তবয়ষ্ক রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি বা মৃত্যুর ঝুঁকি ৮৯ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারার প্রমাণ মিলেছে।
এই হার ফাইজারের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি মের্কের করোনা পিল মলনুপিরাভিরের চেয়ে বেশি। জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য সদ্য মার্কিন খাদ্য ও ওষুধের মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডিমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) অনুমোদন পাওয়া ওষুধ মলনুপিরাভির করোনায় আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর ঝুঁকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে সক্ষম।
প্যাক্সলোভিড নামের ওষুধটি প্রস্তুতের পর মোট ১ হাজার ২১৯ জন করোনা রোগীর ওপর এই ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। ট্রায়ালে অংশ নেওয়া করোনা রোগীরা সবাই মৃদু ও মাঝারি উপসর্গে ভুগছিলেন।
এমপিপির নির্বাহী পরিচালক চার্লস গোর জানান, চুক্তিতে ৯৫টি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৫৩ ভাগই বাস করেন এই দেশগুলোতে।
চুক্তি অনুযায়ী করোনা ভাইরাসে পর্যুদস্ত বেশ কয়েকটি দরিদ্র দেশে পিল তৈরির বিষয়টি বাদ দেওয়া। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে কিউবা, ইরাক, লিবিয়া জ্যামাইকা ও ব্রাজিল। এসব দেশকে সরাসরি ফাইজার থেকে উচ্চমূল্যে বড়ি কিনতে হবে। চীন এবং রাশিয়াতেও বড়ি তৈরি করবে না ফাইজার, অথচ দেশ দুটিতে দেড়শো কোটির বেশি মানুষ রয়েছে।