একটি বাবুবাজারের গল্প
প্রতিটি মৃত্যুর জন্যই টিকে থাকে এক একটি জীবন।
কালের জঙ্গলে ঢুকে পড়ে, আমি আলো হারিয়ে ফেলি নিজের।
আর আমার নীরব থাকার যন্ত্রণায়
বুকের মধ্যে কবিতা ফলিয়ে, জল ঢালি সারাবেলা।
কারণ আমি জানি, ভেঙে যাওয়া হৃদয়ই একমাত্র জানে
বাঁধ ভাঙ্গার অশ্রুর কবিতা!
যেকোনও গর্তের কাছেই
অসহায় আলো, মনে হয় আমাদের।
মনে হয় শূণ্য, অন্ধকার রহস্যের যা-কিছু।
দেখি, মাছ বেচতে গিয়ে মাংস হারিয়ে ফেলা মেয়েটি নিজের, তার রক্ত গর্জে ওঠে;
বাবুবাজার সব চুপ হয়ে থাকে।
স্থির হয়ে বসে থাকে মানুষ।
লক্ষ্য পুরণের শর্ত
কিছুতেই কিছু, কোনও ভাবে না এলেই
তার না-আসাটা মুহূর্তের জরুরি; এটা ভেবে
আশ্বস্ত থাকলেই একদিন ঠিক সে এসে পড়বে।
অপেক্ষার প্রয়োজন,
গুরুত্ব হিসেবে সাময়িক শান্তির চেয়েও বেশি।
কবিতা বাসা হৃদয় অত্যন্ত সহিষ্ণুর হয়।
ধৈর্য ধরাটা যে কোনও মানুষেরই
শিরোধার্য বক্তব্যের হলে
সাফল্য আসাটা কোনও স্বপ্নের নয়।
লক্ষ্য পুরণের একমাত্র শর্ত হল
সততার মুঠোর ভিতরে চুপ হয়ে থাকা!
বিন্দু কবিতা
তারপর আর মনে রাখবার দিন আসেনি তোমাকে।
তোমার সকাল সব হারিয়ে ফেলছে আলো। চলে যাচ্ছে বালক,
আমাকে ছাড়িয়ে দূরে চলে যাচ্ছে সেই বালকের খুশি।
ছড়িয়ে পড়ছে অসুখ
আমার সারা গায় আত্মহত্যার স্মৃতি কন্যা
বিশেষ ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাঠিকা স্বরূপ।
না, আমি ওকে আমার কবিতার একটি লাইনও পাঠ করতে বলিনি।
বলিনি থেকে যেতে।
তবু সেও যদি একদিন ফুরিয়ে যায় আমার কবিতা থেকে তবে,
তার চলে যাওয়ার মুহূর্তটিই হবে আমার শেষ নিঃশ্বাসের একটিমাত্র বিন্দু কবিতা।
একটি সোনালী প্রশ্ন
কাউকে মাড়িয়ে যাওয়াটা কখনও ভালো কথা নয়।
তোমার কথা প্রতি ভঙ্গুর হয়েছি।
আদর সময়ের শেষ ফেলে রেখে তুমি চলে গেছো শহর ঠিকানায়, চুম্বন শ্রাবন ভোর …..
তোমার চলে যাওয়ার দূর অন্ধকারে, আমি জানতে পারি, তুমি কখনওই ছিলে না আমার।
তোমাকে গল্পে লিখতে না পারার কবিতা
আজও তাই আমাকে কস্ট দেয়, বড্ড যন্ত্রণা দেয়।
এখন রাত্রি গভীর অনেক।
সোনালী প্রশ্নের মুখে তোমার স্নান,
আমি দূর থেকে দেখি, স্বপ্নেরা সুন্দর বিছানা পেয়ে কেমন স্থির হয়ে আছে!
আমার সমস্ত প্রতিভা জুড়ে
আমার দুঃখ এবং সুখের শান্তির আশ্রয় তোমার বুক—-
মাটির কুলুঙ্গি সম্পদ, শান্ত এবং সুন্দর ….
তুমি উনুনে রান্না চড়াও।
নুন-ভাতের স্বপ্ন আমার দুপুর গড়িয়ে খেলা করে।
ঐশ্বর্যের হয়ে ওঠে জীবন।
হইচই আলো ক্রমশ হালকা হয়ে আসছে
এখন বিকেলের গায়ে। তুমি রাত্রি হয়ে উঠলে আলো নয়,
অন্ধকার ঘষে ঘষে যেভাবে
আগুন জ্বালায় যুবক, আমি সেই লেখা চাই।
তোমার প্রেমের ভাপ শুষে নিয়ে নিয়ে ক্রমশ ভারী হয়ে আসে আমার বুক।
আর আমি অতল স্বপ্নের হয়ে যাই ক্রমশ তখন!
আমার সমস্ত প্রতিভা জুড়ে
পৃথিবীর সুন্দর নারীরা লাবণ্য খাটিয়ে,
ওভাবে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে বলেই আমি রোজ কবিতা লিখি, একটি, দুটি …..
রণকৌশল
গভীরে, আরও গভীরে নামতে গেলে
জলে সাঁতার জানাটাও ভীষণ জরুরি।
অন্ধকারে কিংবা রহস্যের মধ্যে অপরাধ থাকাটা অসম্ভবের কিছু নয়।
যা-কিছু সুন্দর তার সবই আলো হয়না জানি।
তবু তুলসীতলায় ধূপ জ্বালো তুমি, প্রদীপ,
আলো দেখিয়ে কিছুটা সান্ধ্য – বিশ্বাস গড়ে নাও বুকের ভিতর।
অন্ধকারও সৌন্দর্যের ব্যক্তিগত হয়ে উঠে কখনও – সখনও!
এদিকে কবিতার নৈকট্য ক্রমশ বেড়েই চলেছে আমার, ততোধিক ক্ষুধা!
ভাত পাইনা আমি।
পাতার অক্ষর খুঁটে খুঁটে খাই। বড় হই।
আর বড় হয়ে বড় বেশি রুগ্ন হয়ে পড়ি জীবন।
যা দিনকাল চলছে, সংসারের হাল ধরতে,
পাথর ভাঙতে ভাঙতে এখন নিজেকে
ইস্পাত গড়িয়ে রপ্ত করে চলেছি আমি বৈবাহিক রণকৌশ;
কীভাবে কবিতা থেকে দূরে,
আরও কিছুটা গাঢ় অন্ধকারে, দাম্পত্যের ভালো থাকা যায়!