দস্যুমুক্ত সুন্দরবনের তিন বছর

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে জলদস্যু মুক্ত হওয়ার তিন বছর পূর্তি হচ্ছে আগামীকাল ১ নভেম্বর। বনটিতে এখন শান্তির সুবাতাস বইছে। অপহরণ-হত্যা এখন তিরোহিত। জেলেদের কষ্টার্জিত উপার্জনের ভাগও কাউকে দিতে হচ্ছে না।

মওয়াল, বাওয়ালী, বনজীবী, বন্যপ্রাণী এখন সবাই নিরাপদ। নির্বিঘ্নে আসছে দর্শনার্থী-পর্যবেক্ষক, জাহাজ বণিকেরা। এভাবেই সরকারের দূরদর্শিতায় সুন্দরবন অর্থনৈতিক গতিশীলতা ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।

এদিকে দস্যুমুক্ত সুন্দরবনের তিন বছর পূর্তি ও জলদস্যু পুনর্বাসন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে এলিট ফোর্স র‌্যাব। আগামীকাল সোমবার বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা কমপ্লেক্স মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

২০১৮ সালের এই দিনে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে আনুষ্ঠানিকভাবে দস্যুমুক্ত এলাকা ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন থেকে সুন্দরবন দস্যুমুক্ত। আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দস্যুরা আত্মসমর্পণ করেছে।’

- বিজ্ঞাপন -

সুন্দরবনে গড়ে প্রায় ১ লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক প্রতিবছর ঘুরতে যান। যেই সুন্দরবন ২৪ ঘণ্টায় ছয়বার রূপ পাল্টায়, যেই সুন্দরবন বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদের খনি। যেই সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে, সেই সুন্দরবন এখন দস্যুমুক্ত।

সুন্দরবন হলো বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রশস্ত বনভূমি যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলির অন্যতম। গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকার বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুই জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জুড়ে বিস্তৃত।

সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে পরিচিত সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি। ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি অংশ ভারতে।

সুন্দরবনের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, স্বাদুপানি জলাভূমির বনাঞ্চল। সুন্দরবনের এক-তৃতীয়াংশই নদী-খাল আবৃত। স্বাদুপানির জীবমণ্ডলের পানি সামান্য নোনা এবং বর্ষাকালে এই লবণাক্ততা কিছুটা হ্রাস পায়, বিশেষ করে যখন গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানির কারণে নোনাজল দূর হয় এবং পলিমাটির পুরু আস্তরণ জমা হয়।

মৎস্য সম্পদের প্রাচুর্যের কারণে এ নদী-খাল ঘিরেই একসময় সুন্দরবনে গড়ে উঠেছিল বিশাল জেলে সম্প্রদায়। ১৯৮৫-৮৬ সালের দিকেও সুন্দরবনের নদী-খাল থেকে মাছ পাওয়া যেত ২০ হাজার টনের কাছাকাছি।

- বিজ্ঞাপন -

মৎস্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে সুন্দরবন এলাকা থেকে মাছ আহরণ হয়েছিল ১৮ হাজার ৩৬৬ টন। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ১৭ হাজার ৫৮০ টনে। ২০১৫-১৬ অর্থবছর মাছের পরিমাণ কমে দাঁড়ায় মাত্র ১৬ হাজার ৮৭০ টনে।

এদিকে মাছের এই বিশাল বাজারের কারণে এসব এলাকায় একদিকে যেমন নতুন নতুন জেলে এই পেশায় আসে, অন্যদিকে এই অঞ্চলে জেলের ওপর প্রভাব বিস্তার করার জন্য একশ্রেণির দস্যু নিজেদের আস্তানা গড়ে তোলে। সুন্দরবনে মাছ ধরতে যাওয়া বিভিন্ন ট্রলার এবং ট্রলারের জেলেদের জিম্মি করে টাকা আদায় করত তারা। দস্যুরা জেলে ও বনজীবীদের কাছ থেকে নিয়মিত মোটা অংকের চাঁদা না পেলে অপহরণ করত, কখনো টাকা না পেয়ে মারধর করত। একপর্যায়ে জেলেরা অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ঋণ করে টাকা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের ছাড়িয়ে আনত। এ দস্যুদের মধ্যে ছোট-বড় বিভিন্ন দল থাকলেও কখনো কখনো নিজেদের কোন্দলের কারণে দল ভেঙে একাধিক দস্যু দল গড়ে ওঠে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!