ইয়েমেনের মারিব অঞ্চলে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায় ২৬০ জনের বেশি হুথি সদস্য নিহত হয়েছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলের তেল-গ্যাস সমৃদ্ধ ওই অঞ্চলে গত তিন দিনে চালানো বিমান হামলায় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। রোববার (২৫ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে সৌদি জোট।
জোটের বরাত দিয়ে সৌদি প্রেস অ্যাজেন্সি (এসপিএ) জানিয়েছে, মারিবের ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণের আল-জাওবা এবং আল-কাসসারার ৩০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে হামলা চালায় সৌদি জোট। এতে ধ্বংস হয় বিদ্রোহীদের ৩৬টি সামরিক যানবাহন এবং মৃত্যু হয় ২৬৪ জনেরও বেশি হুথি সদস্যের।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী সৌদি জোটের হামলার ব্যাপারে খুব একটা মন্তব্যও করে না। গত দুই সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিনই মারিবের চারপাশে বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। গত সপ্তাহে ১৬০ হুথি সদস্যকে হত্যার কথা জানিয়েছিল সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট।
হুথি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মারিব দখলে অভিযান চালিয়েছিল। তবে এ সময় অসংখ্য যোদ্ধার মৃত্যু হওয়ায় তাদের সেই দখল অভিযান কয়েক মাস স্থগিত ছিল। এরপর ২৩ সেপ্টেম্বর মারিব প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হুথি বিদ্রোহীরা।
সৌদি জোট বলছে, হুথিদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর থেকে মারিবে বেসামরিক নাগরিকদের চলাচল এবং মানবিক ত্রাণ সহায়তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে ২০১৫ সালের শুরুর দিকে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে সৌদিতে পালিয়ে যান। এরপর ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট।
তবে তাদের অভিযান শুরুর পর আরও তীব্র হয়ে ওঠে ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকট। বর্তমানে ইয়েমেনে শাসন চলছে দুই শাসকগোষ্ঠীর হাতে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থন তথা সরাসরি সামরিক সহযোগিতায় মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে। অন্যদিকে হুথি বিদ্রোহীরা তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে উত্তরাঞ্চল।
মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ‘ছায়াযুদ্ধ’বলা হয়ে থাকে ইয়েমেনের চলমান এই সংঘাতকে। মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং এক সময়ের স্বচ্ছল এই দেশ দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। ইয়েমেনের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ খাদ্য ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের গুরুতর সংকটে ভুগছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সূত্র: আল জাজিরা