সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় অপরাধী ছাত্রলীগ হোক বা আর যে দলেরই হোক তার বিচার হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
রোববার (২৪ অক্টোবর) বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় এক ছাত্রলীগ নেতার নাম আসা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ছাত্রলীগ বা অন্য লীগ বা অন্য দল, এসব না। যারা অপরাধ করবে তাদের বিচার হবে। সে যেই দলেরই হোক যে গোষ্ঠীরই হোক যে জাতিরই হোক। কিন্তু অপরাধী অপরাধীই, তার বিচার হবে।
আওয়ামী লীগ অবশ্যই অসম্প্রাদায়িক রাজনীতি বিশ্বাস করে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মানুষকেও সে দীক্ষাই দীক্ষিত করেছেন বলে জনগণ সাম্প্রদায়িক রাজনীতির দিকে ঝুঁকে না। সেক্ষেত্রে কেউ যদি ব্যক্তিস্বার্থে অন্যায় করে সেটাও অন্যায় এবং তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
রংপুরের পীরগঞ্জে সনাতন সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় র্যাবের হাতে আটক হওয়া সৈকত মণ্ডল (২৪) একজন ছাত্রলীগ নেতা। তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজের দর্শন বিভাগের ছাত্র ও ওই বিভাগের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।
তবে, হামলার ঘটনার পর ১৮ অক্টোবর (সোমবার) তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুজ্জামান সিজার। সৈকত উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের চেরাগপুর গ্রামের রাশেদুল মণ্ডলের ছেলে।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, রংপুরের পীরগঞ্জে সাম্প্রদায়িক হামলার উসকানিদাতা সৈকত মণ্ডল। তিনি হামলায় সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়া তার নির্দেশেই মাইকিংয়ের মাধ্যমে লোক জড়ো করেছিল মসজিদের মোয়াজ্জেম রবিউল। রবিউল খেজমতপুর গ্রামের মৌলভী মো. মোসলেম উদ্দিন বাবুর ছেলে।
এর আগে শুক্রবার (২২ অক্টোবর) রাতে টঙ্গী এলাকা থেকে সৈকত মণ্ডল ও তার সহযোগী রবিউল ইসলামকে (৩৬) আটক করে র্যাব-১৩।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সৈকত একটি ফেসবুক পেজের অ্যাডমিন। ওই পেজে তার তিন হাজার ফলোয়ার রয়েছে। তিনি প্রথমে ওই পেজে ধর্মীয় উসকানিমূলক পোস্ট দেন। পরে মাইকিংয়ের মাধ্যমে লোক জড়ো করে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেন।
তিনি বলেন, সৈকত প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব ইচ্ছাকৃতভাবে করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন হামলায় সরাসরি অংশ নিয়ে বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। আটক হওয়া রবিউল ঘটনাস্থলের পাশে একটি মসজিদের মোয়াজ্জেম ছিলেন। সৈকতের নির্দেশেই রবিউল মাইকিং করে লোকজন জড়ো করেছিলেন। এরপর উঁচু একটি স্থানে দাঁড়িয়ে সৈকত হামলা ও অগ্নিসংযোগের জন্য সবাইকে নির্দেশনা দেন। ঘটনার পরপর সৈকত ও রবিউল দুইজনই আত্মগোপনে চলে যান।