রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতেই মুহিবুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), যাকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের উখিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। মুহিবুল্লাহ হত্যায় মিশনে অংশ নেওয়া ১৯ জনের মধ্যে প্রধান আসামিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও এপিবিএনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
শনিবার দুপুরে উখিয়ায় মুহিবুল্লাহর হত্যার কিলিং স্কোয়াডের সদস্য আজিজুল হককে গ্রেপ্তারের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি নাঈমুল হক।
আজিজুল হক ছাড়াও কুতুপালং ক্যাম্প-১ এর ডি ৮ ব্লকের আব্দুল মাবুদের ছেলে মোহাম্মদ রশিদ প্রকাশ, মুরশিদ আমিন ও একই ক্যাম্পের বি ব্লকের ফজল হকের ছেলে মোহাম্মদ আনাছ ও নুর ইসলামের ছেলে নুর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে মুহিবুল্লাহ হত্যায় আজিজুলের স্বীকারোক্তির কথা জানিয়ে ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসপি নাঈমুল হক বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মুহিবুল্লার হত্যার দুই দিন আগে মরগজ পাহাড়ে কিলিং মিশনের জন্য বৈঠক করে দুর্বৃত্তরা। সেখান থেকে পাঁচজনকে অস্ত্রসহ মোট ১৯ জনকে নির্দেশ দেওয়া হয় মিশন শেষ করার জন্য।
নাঈমুল হক আরও জানান, রোহিঙ্গাদের নেতা হিসেবে জনপ্রিয়তা ঠেকাতে ২৯ সেপ্টেম্বর মুহিবুল্লাহকে বাসা থেকে অফিসে প্রত্যাবাসন বিষয়ে কথা আছে বলে ডেকে আনেন গ্রেপ্তার মুরশিদ। তারপর বাকিদের সংকেত দেন তিনি। প্রথমে একটি, পরে দুইটিসহ চারটি গুলি করা হয় মুহিবুল্লাহকে। তারপর মুহিবুল্লার বাড়ির পেছন দিয়ে পালিয়ে যায় স্কোয়াডের পাঁচ সদস্য। পরে সবাই সতর্ক হয়ে যায়। বিভিন্ন জনের ওপর দোষ চাপাতে থাকে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার লাম্বাশিয়া শিবিরের ডি ব্লকের ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) সংগঠনের কার্যালয়ে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন মুহিবুল্লাহ (৪৮)। তিনি ওই সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন। হামলার জন্য মিয়ানমারের সশস্ত্র গ্রুপ ‘আরাকান স্যালভেশন আর্মি’ আরসা (আল-ইয়াকিন নামেও পরিচিত) দায়ী করা হয়েছিল। এ সময় আরসার কয়েকজন অস্ত্রধারীর নাম প্রচার করা হয়।
ঘটনার পরদিন মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তারও হয়েছে। তাদের মধ্যে ইলিয়াস নামের একজন রোহিঙ্গা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।