গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে ১০১ বছর বয়সে মা হলেন এক বৃদ্ধা। বেশি বয়সে মা হওয়া খুবই ঝুঁকিপুর্ণ। ১০ মাস ১০ দিন একটা প্রাণকে নিজের শরীরে রাখা বেশি বয়সে খুবই বিপজ্জনক। কিন্তু অনেকেই সেই প্রতিকূলতাকে জয় করেও বেশি বয়সে মা হয়েছেন। এত দিন সব চেয়ে বেশি বয়সে মা হওয়ার কৃতিত্ব ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার এক মহিলার। তাঁর নাম মালেগওয়ালে রামোকগোপা। তিনি ৯২ বছর বয়সে নিজের জন্মদিনের ঠিক ৩ দিন পরে তাঁর ২৫ এবং ২৬ তম, মানে একসঙ্গে দুটি সন্তানের জন্ম দেন। এই ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৩১ সালে।
তার পর কেটে গেছে আরও ৯ দশক। এত দিন কেউ আর ওই বয়সে মা হওয়ার ঝুঁকি নেননি। কিন্তু সেই রেকর্ড ভেঙে ১০১ বছর বয়সে মা হলেন ইতালির এক মহিলা। তিনি আগেই ১৬টি সন্তানের মা ছিলেন। তবুও তিনি এই বয়সে এসে মা হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেই ভদ্র মহিলার নাম— আনাতোলিয়া ভার্তাদেলারম। তাঁর মা হওয়ার প্রক্রিয়াটি খুব একটা সহজ ছিল না। তাঁর স্বামী মারা গিয়েছিলেন বেশ কিছু বছর আগেই।
এই বয়সে এসে তাঁর হঠাৎ ইচ্ছা জাগে মা হওয়ার। আর তার পর থেকেই তিনি ইন্টারনেটের সাহায্যে খুঁজে বের করেন এক স্পার্ম ডোনারকে। এবং গর্ভধারণ করার আগেই তাঁর সঙ্গে কোর্ট পেপারে চুক্তিবদ্ধ হন। তিনি যাতে পরবর্তিকালে কোনও সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য সেই চুক্তিপত্রে তিনি আগেই জানিয়ে দেন যে, আমি কখনওই তোমাকে আমার স্বামী হিসাবে দাবি করব না। আর আমি আমার সন্তানের বাবা হিসাবেও কখনও তোমাকে দায়িত্ব নিতে বলব না। আমি আমার মৃত স্বামীকেই ভালবাসি।
তার পর সেই ডোনার রাজি হয়ে যান স্পার্ম দিতে। অবশেষে তিনি মা হন। তবে তাঁর এই মা হওয়ার ঘটনাটি খুব একটা ভাল চোখে দেখেননি ইতালিবাসী। মা হওয়ার পরেই বহু সমালোচনার মুখে পড়তে হয় সেই মহিলাকে। কারণ ইউরোপের দেশগুলোতে ডিম্বানু প্রতিস্থাপন একটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
তাই তিনি তুরস্কের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে গিয়ে অস্ত্রপ্রচার করিয়েছিলেন। সেই নার্সিংহোমটি ছিল ইউরোপীয় আইনের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফলে সেই বৃদ্ধা মহিলার সামনে মা হওয়ার ব্যাপারে কোনও বাধাই কোনও প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে পারেনি।
মা হওয়ার পরে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই নার্সিংহোমের সমস্ত চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত সমস্ত কর্মী ছাড়াও, ওই নার্সিংহোমের কর্তৃপক্ষকে। তিনি অবশ্য কাউকেই সেই নার্সিংহোমের নাম জানাননি। তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর সন্তান খুব ভাল আছেন।