করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর বড়ভিটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮৫ ছাত্রী বাল্যবিয়ের পিঁড়িতে বসেছে।
মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার আগে এই বিদ্যালয়ে প্রতিদিন গড়ে ছাত্রীর উপস্থিতি ছিল ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ, এখন সেখানে উপস্থিতি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ।
বিয়ে হয়ে যাওয়া নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাবা বলেন ‘বাহে, আমরা গরিব মানুষ। ভ্যান চালিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করি। জানেন তো গরিব মানুষের দোষ বেশি। ভালো একনা আলাপ আসছে, তাই মোর মেয়েটা বিয়া দিছোং বাহে।’
বড়ভিটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহা. মতিউর রহমান খন্দকার জানান, বিদ্যালয়ের ৩৪৫ ছাত্রীর মধ্যে ৮৫ জনের বাল্যবিয়ে হওয়ার বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণিতে দুজন, সপ্তম শ্রেণিতে ১১, অষ্টম শ্রেণিতে ১৭, নবম শ্রেণিতে ২৮, দশম শ্রেণিতে ১৪ ও চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী ১৩ জন।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয় খোলার পর ছাত্রী উপস্থিতি কম থাকায় শিক্ষকরা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর শুরু করে। যেসব শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে, আমরা তাদের বাড়িও যাচ্ছি। ওই সব শিক্ষার্থী যাতে স্কুলে আসে, সে ব্যাপারে তাদের অভিভাবকদের সচেতন করছি।’
ফুলবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই বলেন, ‘মৌখিকভাবে বড়ভিটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮৫ জনের বাল্যবিয়ের তথ্যটি পেয়েছি। প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত আকারে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।’
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন দাস বলেন, ‘বাল্যবিয়ে কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়, সে বিষয়ে সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন ধরনের প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে আমরা কাজ শুরু করেছি।’
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামসুল আলম জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সব বিদ্যালয় থেকে বাল্যবিয়ের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য পাওয়ার পর করণীয় নির্ধারণ করা হবে।