জোয়ারের পানিতে প্লাবিত বিদ্যালয় প্রাঙ্গন তাই হাটু সমান পানি মাড়িয়ে আসতে হয় শ্রেণিকক্ষে। তারপর জরাজীর্ন টিনশেড কক্ষে চলে নিয়মিতো পাঠদান ও গ্রহন কার্যক্রম।আর এরইফাকে যদি কাউকে শৌচাগারে যেতে হয় তাহলে, তাকে পরিধেয় পোশাক ভিজিয়ে পানি মাড়িয়ে যেতে হবে সেখানে।
ফলে এতে করে স্বাভাবিক পাঠদান ও গ্রহন কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। আর এ কারণে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের লেংগুটিয়ার পশ্চিম কেউটিয়া গ্রামের আবুল হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গন উচুকরণের পাশাপাশি একটি ভবনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, পশ্চিম কেউটিয়া গ্রামটি মূলত নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল। নদী ও খাল বেস্টিত হওয়ায় এখানকার বেশিরভাগ এলাকা বন্যা-জলোচ্ছাসের সময় পানিতে প্লাবিত থাকে। সেইসাথে ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় নিরাপদ আশ্রয়ের কোন ব্যবস্থাও নেই এগ্রামে।অথচ এই গ্রামেই সরকারের আশ্রায়ন বিভিন্ন প্রকল্পের বহু ঘর রয়েছে, যাদেরও ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রের প্রয়োজন হয়। তাই আবুল হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য সাইক্লোন সেল্টার সেন্টার কাম স্কুলভবন বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা রিপন হাওলাদার জানান, সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়েও দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়, কারণ অল্প জোয়ারেই টিনশেড জরাজীর্ণ ভবনটির চারিপাশ পানিতে তলিয়ে থাকে। বাচ্চাদের অনেক সময় কোমড় সমান পানি পাড় হয়ে শ্রেনীকক্ষে যেতে হয়, আবার শ্রেনীকক্ষ উচু হওয়ায় সেখানে সাপসহ সরীসৃপ প্রানীরা আশ্রয় নেয়। উভয় কারনেই অর্থাৎ পানিতে ডুবে কিংবা সাপের কামরে যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইমরান মাহাবুব বলেন, পানিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গন তলিয়ে থাকলে ছোট ছোট বাচ্চা ও শিক্ষক সবাইকে ক্লাশরুমে আসতে হয় পানি মাড়িয়ে। হয়তো শিক্ষকরা হাটুজল পার হয়ে আসেন কিন্তু শিক্ষার্থীদের কোমড় পর্যন্ত পানি থাকে মাঠটিতে। ছোট ছোট বাচ্চাদের বিদ্যালয়ে আসা ও যাওয়া পর্যন্ত; পাঠদানের থেকে বেশি উৎকন্ঠায় থাকতে হয় তারা যেন অসতর্কতামূলক পানিতে না পরে যায়।
তিনি বলেন, এছাড়া ক্লাশরুম থেকে বিচ্ছিন্ন শৌচাগারেও পানি মাড়িয়ে যেতে হয়। আর শৌচাগার পানিতে তলিয়ে থাকলে তো সবথেকে বেশি ভোগান্তিতে পরতে হয় ছাত্রীসহ নারী শিক্ষকদের। এককথায় পানির কারনে শৌচাগার ব্যবহার বন্ধই থাকে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একে এম হাফিজুর রহমান বলেন, আবুল হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় জেলেসহ খেটে খাওয়া মানুষের সংখ্যাই বেশি। যাদের সন্তানের এ বিদ্যালয়ে নিয়মিতো পাঠগ্রহন করেন। ২০১৩ সালে সরকারি হওয়া এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ২ শত শিক্ষার্থী রয়েছে। ৫ জন শিক্ষক মিলে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ক্লাশের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠ উচুকরণসহ ভবনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। তবে স্থানীয়রা দাবি করেছেন ভবনটি যাতে সাইক্লোন সেল্টার সেন্টার কাম স্কুলভবন হয়। কারণ এই চরের আশপাশে বেশ কয়েকটি নদী ও খাল রয়েছে, যেগুলো বৈরি আবহাওয়ার সময় ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করে।