বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে সমুদ্রবন্দর ও নদীবন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়াসহ উপকূলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ অবস্থায় সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর (তিন নম্বর) সতর্কতা সংকেত এবং নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর (এক নম্বর) সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সোমবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় ১১ জেলা ২ থেকে ৩ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মধ্য ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে এখন উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেটের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, নিম্নচাপটি এখন চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৮৫ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিম দূরে অবস্থান করছে। এছাড়া মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৮৫ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিম দূরে অবস্থান করছে। এটি আরো পশ্চিম ও উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
নদীবন্দরগুলোর জন্য এক সতর্ক বার্তায় বলা হয়, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য এসব এলাকার বন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সমুদ্রবন্দরগুলোর সতর্ক বার্তায় বলা হয়, গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিয় ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।
গভীর নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থলের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পযন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপের কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল।
এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি গভীর সাগরে বিচরণ করতে না করা হয়েছে।