শাহজাদপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, দুর্ভোগে ২০ হাজার পানিবন্দী মানুষ

শামছুর রহমান শিশির
শামছুর রহমান শিশির
3 মিনিটে পড়ুন

গত ২৪ ঘন্টায় উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাতে দেশের তাঁত ও দুগ্ধশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে যমুনা নদীতে ৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ করতোয়া, বড়াল, হুরাসাগর ও গোহালা নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে শাহজাদপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে।

এতে পানিবন্দী হয়ে পড়া হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুঁটছে। আবার অনেকেই পরিবার পরিজন ও গবাদীপশু নিয়ে নদী তীরবর্তী উচু বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। যমুনার দুর্গম চরাঞ্চলের অনেক স্থানে নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এসব স্থানে দুস্থ ও অসহায় মানুষের হাতে কাজ না থাকায় তাদের মাঝে খাবার সংকট ক্রমশঃ ঘনিভূত হচ্ছে। বন্যকবলিত এলাকায় পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা লাজুক আকার ধারণ করেছে। পানিবাহিত নানা রোগে অনেকেই অাক্রান্ত হচ্ছে। অনেক স্থানে গ্রামীণ সড়ক ও ব্রিজ বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এর ওপর দিয়ে নৌকাযোগে চলাচল করছে পানিবন্দী মানুষজন। অনেক স্থানে তাঁত কারখানায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় ও হ্যান্ড থাইজিং করতে না পারায় অসংখ্য তাঁতী মহাজন ও শ্রমিকেরা মহাবিপাকে পড়েছে।

ইতিমধ্যেই উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় লাখ লাখ গবাদিপশু নিয়ে গো-খামারিরা মহাবিপাকে পড়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে কাঁচা ঘাসের তীব্র সংকট। এদিকে, পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ও যমুনার প্রবল স্রোতে উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ৬ গ্রামে নদী ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত ১ সপ্তাহে এসব গ্রামের প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি ও বিস্তৃত ফসলী জমি যমুনা গর্ভে বিলীন হয়েছে। সিরাজগঞ্জ পাউবো এসব স্থানে জিও টেক্সটাইল বস্তা ফেললেও ভাঙনের তান্ডব রোধ না হয়ে এর তীব্রতা ক্রমশঃ বেড়েই চলেছে। ফলে আতংকিত হয়ে প্রতিটি মুহূর্ত চরম উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছে যমুনা তীরবর্তী এলাকাবাসী।

Shahzadpur News pic 2....01.09.2021 শাহজাদপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, দুর্ভোগে ২০ হাজার পানিবন্দী মানুষ
Exif_JPEG_420

এলাকাবাসী জানায়, গত কয়েকদিন ধরে উজানের ঢল ও ভারিবর্ষণে যমুনা, করতোয়া, বড়াল, হুরাসাগর ও গোহালা নদীতে পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শাহজাদপুর উপজেলার রূপপুর উরিরচর, শান্তিপুর, হাবিবুল্লাহনগর, পোরজনা, জামিরতা, কৈজুরি, জালালপুর, খুকনী, সোনাতুনী, গালা, রূপবাটি, কায়েমপুর ও পোতাজিয়া ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। সেইসাথে, চলনবিলের রাউতারা, ইটাখোলা, ভুরভুরি, কাওয়াক, হার্ণিসহ পোতাজিয়ার বিস্তৃর্ণ আবাদী জমি বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় লাখ লাখ গবাদিপশু নিয়ে গো-খামারিরা মহাবিপাকে পড়েছে। এসব এলাকায় কাঁচা ঘাসের সংকট প্রকট হয়ে পড়ায় বেশি দাম দিয়ে দানাদার গো-খাদ্য কিনতে হচ্ছে খামারিদের।

- বিজ্ঞাপন -

বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ এ প্রতিনিধিকে বলেন, “গত ১ সপ্তাহে যমুনা তীরবর্তী জালালপুর ইউনিয়নের ঘাটাবাড়ি, পাকুড়তলা, জালালপুর, বাঔখোলা, ভ্যাকা ও কুঁঠিপাড়া গ্রামে ভাঙনের তান্ডবলীলা চলছে। যমুনার ভয়াবহ ভাঙনে এ ৬ গ্রামের প্রায় শতাধিক বাড়িঘর ও প্রায় ৫০ একর ফসলী জমি ইতিমধ্যেই যমুনায় বিলীন হয়েছে। এ ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। ভাঙন ও বন্যাকবলিত অসহায় এসব জনমানুষের মাঝে ত্রাণ সহায়তা প্রদান অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।”

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!