সুইসাইড পয়েন্ট
উঁচু নিচু ঝকঝকে পিচের রাস্তা
দু-ধারে শাল সেগুনের..দেশ
মনুষ্যহীন পৃথিবীর সীমান্ত ছাড়িয়ে
ড্রাইভার গাড়ি থামিয়ে বলল
দেখে আসুন সুইসাইড পয়েন্ট।
একলা বাইক ঝোপের ভিতরে
তবে কি কেউ!
দূরে পাহাড়ি রেখা আকাশে
নদীর মতো নীল নদী
চিত্রকর এঁকে রেখে গেছে
এখানে সুইসাইড করা যায়?
তারা কি অন্ধ ছিলো!
আমরা সুইসাইড না করে ফিরে এলাম।
আমার সূর্য চন্দ্র
সেই অবিকল শীতের রোদ
বিকেল লালে লাল
এভাবে গঙ্গায় সন্ধ্যা নামত
সেদিনের মতো অলস নৌকোগুলো
ঘাটে আছে ভাটিয়ালি গানে
সুখের সময় তেমনি আছে ।
শুধু আমার সূর্য চন্দ্র ডুবেছে।
কান্না
আমি যখন আমার মানুষের
ভেজা চোখ দেখি
মনে হয়
কতো সুখি।
আমরও যে কান্না আছে
বুকের ভেতর আগুনে পুড়ছে ছাই
নাভিমূল ভাসিয়ে শূন্য ঘরে ফিরে
চোখের জল নিয়ে যাই
গভীর রাতের দরজায়
কেউ যেনো দেখতে না পায়।
স্মৃতির গয়না
আমার জানলার গায়ে যে নিমগাছ
তিন বছর ধরে এক জায়গায়
তবু তার খেলার শেষ নেই
মাতাল হওয়ায় নাচ দেখায়।
বৃষ্টি ফুরোলে মাথা নিচু অভিমানে
আর দুটো ধোয়া পাখি
কী যে ওদের কাজ দুজনে !
আমি কতোবার ডাকি।
আমার মানুষ চলে গেছে
যেতে যেতে স্মৃতির গয়না ফেলে
গাছ,পাখিরা জল শুকোয় বৃষ্টিতে
আমার পাহারায় দুহাত মেলে।
স্বপ্নঘুম
স্বপ্নের মধ্যে জেগে থাকি
ঘুমের মধ্যে ঘুম আসে না
স্বপ্নের ভিতরে স্বপ্নঘুম
ঘুমের সঙ্গে রাতজাগা পাখি।
ঘুমোতে পারি না তবুও
স্বপ্ন না ঘুম!
বলি, অনেক হলো
এবার ঘুমোও।
ভোরের আকাশ দেখতে পাই
জেগে আছি স্বপ্নে
এবার ঘুমোতে যাই।
আমায় বলো না
আমাকে বলতে বলো না
আমার সেসব মনে আছে কি না
প্রথম নদীকে দেখার দিন
প্রিয়ার মুখের সেই ছবি
যা দেখে নৌকোডুবি হয়েছিলো।
আমার সেসব কি আর মনে আছে!
ফড়িং ধরে সূতোয় বেঁধেছিলাম
স্কুলে যাওয়ার প্রথম দিন
বাবার বাড়ি কবে এসেছিলাম!
অনেক করেও পাহাড়,জঙল…..
মনে পড়ে না, মনেই পড়ে না।
আমার প্রতিটি মৃত্যু শোক
দাও দাও করে জ্বলছে।
মানুষ হলো সেই হাঁস
সে দুধের মতো
দুঃখ,যন্ত্রণা নিয়ে
জল রেখে যায় যতো।