করোনা মহামারির মধ্যে দেশে দিনে দিনে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। হাসপাতালে বাড়ছে আক্রান্তদের ভিড়। এবছর ডেঙ্গু সন্দেহে মৃত্যুর সংখ্যা অর্ধশতাধিক। এই অবস্থায় ডেনভি-৩ নামে ডেঙ্গু রোগের নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়েছে।
২০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে ডেঙ্গুর নতুন এই ধরনের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)। তাদের দাবি, এই ধরনটির মাধ্যমে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ঢাকার রোগীরা।
রবিবার বিসিএসআইআরের আইএফআরডি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ডেঙ্গু ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের তথ্য উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান গবেষক ড. সেলিম খান।
বিসিএসআইআররের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখ বলেন, ‘বিসিএসআইআরের জিনোমিক গবেষণাগারে একই সঙ্গে ২০ জন ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে জিনোম সিকুয়েন্সিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বিশ্লেষণকৃত নমুনাগুলো পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জানা যায়, এই নমুনা ডেঙ্গু ভাইরাসের ডিইএনভি ৩, অর্থাৎ সোরোটাইপ-৩ এর অন্তর্গত।’
জিনোম সিকোয়েন্সের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু ভাইরাস ফ্লাভিভাইরাস গ্রুপের অন্তর্গত একটি পজিটিভ সেন্স আরএনএ ভাইরাস। ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপ যা ডিইএনভি ১, ডিইএনভি ২, ডিইএনভি ৩, এবং ডিইএনভি ৪, এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এই ভাইরাসের চারটি সেরোটাইপের মধ্যে ৬৫% -৭০% এমিনো এসিড সিকুয়েন্সের মিল আছে। ভাইরাসটি এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায় এবং মশার মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমিত হয়।’
আফতাব আলী শেখ বলেন, ‘প্রতি বছর বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা যায় এবং এটি বাংলাদেশে সংক্রমিত রোগের মধ্যে অন্যতম। যদিও বাংলাদেশে ১৯৬৪ সালে প্রথম ডেঙ্গু রোগী চিহ্নিত হয়, তবে ২০০০ সালে প্রথমবারের মতো এই ভাইরাসের সংক্রমণ বাংলাদেশে মহামারি আকার ধারণ করে।’ আইইডিসিআরের গবেষণা অনুযায়ী, ২০১৬ সালের আগে সেরোটাইপ ডিইএনভি ১, এবং ডিইএনভি-২ এর মাধ্যমে মহামারি সংঘটিত হয়, তখন পর্যন্ত বাংলাদেশে বাকি দুটি সেরোটাইপ শনাক্ত হয়নি। ২০১৭ সালে ডিইএনভি ৩ প্রথম শনাক্ত হয় এবং ২০১৮ সালে ডিইএনভি ৩ এর সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে এবং ২০১৯ সালে এটি মহামারি আকার ধারণ করে।