আশংকার চেয়ে দ্রুত তালেবানের বিজয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এছাড়া আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ভুল নয় বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
সোমবার হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশ্য প্রদত্ত এক টেলিভিশন ভাষণে এসব কথা বলেন বাইডেন। তালেবান আফগানিস্তান দখল নেয়ার পর এই প্রথম তিনি প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখলেন। খবর ভয়েস অব আমেরিকার
বাইডেন বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার বিষয়ে তার সিদ্ধান্তের পিছনে তিনি এখনও ‘অটল’ রয়েছেন।
তিনি বলেন, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের মিশন কখনোই জাতি গঠনের উদ্দেশ্যে ছিল না। সন্ত্রাসবাদের হুমকি যা যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীকে সেই দেশে নিয়ে এসেছে, তা আফগানিস্তানের বাইরেও অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
বাইডেন বলেন, আফগানিস্তানের সৈন্যরাই যেখানে যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে না, সেখানে আমেরিকান সৈন্যদের আরও যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার আদেশ দেওয়া ভুল। গত সপ্তাহের ঘটনাগুলি আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে আবারো অনিবার্য প্রমাণ করলো।
সোমবার ক্যাম্প ডেভিড থেকে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসেন বাইডেন। আগের দিন, তালেবান যোদ্ধারা আফগান রাজধানী কাবুল দখল করে নিলে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যান।
বাইডেন ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব আমেরিকান সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে ধারাবাহিকভাবে সমর্থন করে আসছেন।
এর আগে শনিবার বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আফগান সামরিক বাহিনী নিজের দেশকে রক্ষা করতে না পারলে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি এক বছর না পাঁচ বছর তাতে কোন ক্ষতিবৃদ্ধি হবে না। অন্য দেশের গৃহযুদ্ধের মাঝখানে যুক্তরাষ্ট্রের অবিরাম উপস্থিতি আমার কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না।’
মার্কিন বাহিনী প্রায় ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের চার প্রেসিডেন্ট এর প্রশাসন জুড়ে বিস্তৃত। বাইডেন এপ্রিল মাসে ঘোষণা করেন, সমস্ত আমেরিকান সৈন্য আগস্টের শেষ নাগাদ আফগানিস্তান থেকে দেশে ফিরে আসবে। একটি ছোট বাহিনী সেখানে মোতায়েন রাখার পেন্টাগনের সুপারিশও তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
বাইডেন সেই সময় বলেছিলেন, তিনি পঞ্চম প্রেসিডেন্টের কাঁধে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব তুলে দেবেন না।
মে মাসের শুরু থেকে আফগানিস্তানে তালিবানের হামলা জোরদার হয়, যখন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো মিত্ররা তাদের শেষ অবশিষ্ট সৈন্যদের সেদেশ থেকে প্রত্যাহার করতে শুরু করে। সাম্প্রতিক তালেবান আক্রমণের ফলে এক সপ্তাহের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে তারা একের পর এক আঞ্চলিক দখলদারিত্ব কায়েম করে, যার সব শেষ পরিণতি আফগান সরকারের পতন।
যুক্তরাষ্ট্র কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখলেও, হাজার হাজার মানুষ দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করায় সেখানে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
আফগানিস্তানের বিশৃঙ্খলা নিয়ে বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা বাইডেন প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেছেন।