দ্বীপরাষ্ট্র হাইতিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পের দুই দিন পরও ধ্বংসস্তুপের নিচে মিলছে মৃতদেহ। এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১৩০০ তে পৌঁছেছে। চারদিকে মানুষের চিৎকার-হাহাকারে ভারী হয়ে উঠেছে বাতাস।
হাইতির কর্মকর্তারা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, শনিবার ক্যারিবীয় দেশটিতে ৭.২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২৯৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
জীবিত কাউকে খুঁজে পেতে ধ্বংস্তুপের মধ্যেই তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকারীরা। ভূমিকম্পের কবলে পড়ে গুড়িয়ে গেছে বসত-বাড়ি, গির্জা এবং স্কুল। অনেক হাসপাতাল রোগীতে ভরে গেছে এবং সেখানে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। খবর বিবিসির
কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় পাঁচ হাজার ৭০০ মানুষ আহত হয়েছে এবং অনেক মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
দরিদ্র দেশটিতে গত মাসে প্রেসিডেন্টের হত্যার পর রাজনৈতিক টানাপোড়েনে থাকার সময়েই নতুন করে আবার এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়লো। হাইতির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল বিশেষ করে লি কায়ে শহরটির আশেপাশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বাসিন্দারা মরিয়া হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে আহতদের টেনে বের করার চেষ্টা করছেন।
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে স্থানীয় একটি গির্জা অ্যাংলিকান চার্চের প্রধান আর্চডিকন আবিয়াদে লোজামা বলেন, ‘রাস্তাগুলি চিৎকারে ভরে গেছে। মানুষ তাদের প্রিয়জন কিংবা কোন সম্পত্তি, চিকিৎসা সহায়তা এবং খাবার পানি খুঁজছে।’
মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা- ইউএসজিএস জানিয়েছে যে, শনিবারের ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল সেন্ট লুই ডু সুড শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে। এই কম্পন ১২৫ কিলোমিটার দূরের জনবহুল রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতেও অনুভূত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরিয়েল অঁরি মাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। সেই সাথে জনগণকে ‘সংহতি দেখানোর’ আহ্বান জানিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন যে, তিনি ইউএসএইড এর মাধ্যমে জরুরি মার্কিন সহায়তা অনুমোদন দিয়েছেন। জাতিসংঘও বলেছে যে তারা উদ্ধার কাজে সহায়তা করছে।
প্রতিবেশী দেশ ডোমিনিকান রিপাবলিক খাদ্য এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে। কিউবাও ২৫০ জনের বেশি ডাক্তার নিয়োগ করেছে।