গভীর শোক, বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় জাতি স্মরণ করেছে স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। জাতীয় শোক দিবসে দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে অজস্র কর্মসূচি।
বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর সাজাপ্রাপ্ত খুনিদের খুঁজে বের করে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করার প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে এবারের শোক দিবসে।
রোববার (১৫ আগস্ট) মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকী।
১৯৭৫ সালের এই দিনে ঘাতক চক্র বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
এদিন সকাল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যথাযথ মর্যাদায় ঢাকাসহ সারাদেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী বিভিন্ন সংগঠন নানান কর্মসূচি গ্রহণ করে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
দিনটির শুরুতে রোববার রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, বিভন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে জাতির পিতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। দিবসটি উপলক্ষে আগের দিন শনিবার সন্ধ্যা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা, পাড়া-মহল্লায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো হয়।
রোববার সকাল সাড়ে ৬টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। অনুষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সকাল ৭টায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর নেতৃত্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এর পর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরাসহ সর্বস্তরের মানুষ জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ্য থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী কোরআন তেলাওয়াত, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার, কালো ব্যাজ ধারণ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, মিলাদ মাহফিল, রক্তদান কর্মসূচি, আলোচনা সভা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারমসহ সারা দেশের মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।