মুজিব ধ্রুবতারা
১
পদ্মা মেঘনা যমুনার বুকে
জন্ম নিয়েছে যারা,
তাদের মুজিব শিখিয়ে ছিলেন
দাবি আদায়ের ধারা।।
জেলে মাঝির স্বপ্ন নিয়ে
বিভোর ছিলে তুমি,
কেমন করে ওদের হবে
এক টুকরো ভূমি।
হাসি খুশিতে উঠবে ভরে
চরবাসীদের পাড়া।।
কোন্ সে বাঙালি বাঙালির সুখে
হয়েছে আত্মহারা…
বাঙালির হৃদয়ে বাংলার আকাশে
মুজিব ধ্রুবতারা।
শিক্ষা দীক্ষায় বড় হলে
জেলে মাঝির ছেলে,
গণতন্ত্রের আশার প্রদীপ
রাখবে ওরা জেলে।
কামার কুমার কুলি মজুর
বিশ্বে জাগাবে সাড়া।।
২
এই বাঙালি কাঁদবে না আর
কাঁদবেনা রে বাঙালি আর
কেঁদে ছিলো পচাত্তরে,
১৫ অগাস্ট রাত্রি নিঝুম
সবার চোখেতে ঘুম
গর্জে উঠে বারুদে আগুন
তখনই হঠাৎ করে।।
পিতা মাতা ভাই বোনেদের
করুণ আহাজারি
বুলেট বারুদে শব্দে হলো
ভোরের বাতাস ভারী
রক্তের বন্যা ভেসে ছিলো
বাংলার শ্যামল প্রান্তরে।।
জাতির পিতার প্রাণ নিয়েছে
মীর জাফরের দলে
সেই বেদনার আগুন আজও
বাংলার বুকে জ্বলে
স্বাধীনতার সেই যে স্থাপতির
প্রাণ গেলো ঝরে।।
৩
যেন হাজার বছরের কাঁন্না
জমা ছিলো দুচোখে
অঝোর ধারায় ঝরলো সে জল
তোমাকে হারানোর শোকে।।
স্নেহ মায়া মমতার বাঁধন
হতে পারে এমন যে,
সহজেই বুঝলাম যখন এলো
হৃদয় ভাঙার সমন যে।
চোখের সামনে থেকে হারিয়ে গেলে
চোখেরি তো পলকে।।
চোখের সিমানা পেরিয়ে তুমি
দূর অজনায় গেলে যে
তাই তো খুঁজে পাইনি তোমায়
চোখের পাতা মেলে যে।
ঝড়ের আঘাতে তুমি হারিয়ে গেলে
নিমিষেই তো ঝলকে।।
৪
আমার সোনার বাংলায়
আমি আর
ফিরতে পারবো না
আমার বিশ্বাস ভেঙে
হারিয়ে দিয়েছো
আমি আর জিততে পারবোনা।।
আমার বুকে বুলেট মেরে
কেড়ে নিয়েছো প্রাণ
সারাটি জীবন সংগ্রাম করেছি
দিলে তার প্রতিদান
সুখে থাকো বাঙালি তোমাদের
সুখ আর কাড়বো না।।
বাঙালির প্রেমে আমার যতো
ছিলো অহংকার
পাষাণ বাঙালি ভেঙে চুরে
করে দিলো চুরমার
তোমাদের কাছে লজ্জ্বায়
আমি আর
মুখ দেখাতে পারবোনা।।
৫
অগাস্ট মাসের পনেরো তারিখ
শোকের অভিধান
বাঙালির প্রাণ জাতির পিতার
জীবন অবসান।।
রাতের আঁধার ভেদ করে
গর্জে ওঠে কামান
তুমি সইতে পারোনি পিতা
এতো অপমান
স্বেচ্ছায় তুমি বুক পেতে তাই
দিলে তোমার প্রাণ।।
বাঙালি তোমার মারতে পারে না
বিশ্বাস রেখে ছিলে
তাই কি তুমি অবুঝের মতো।
তোমার জীবন দিলে
তোমার বিশ্বাস অটুট ছিলো
বাঙালি যে বেঈমান।।
৬
একটি আঙুলের ইশারা ছিলো
একটি জাতির লক্ষ্য
একটি জাতি কে জাতির পিতা
মুক্তির জন্য
সহসা করে
ছিলো ঐক্য।।
একটি আঙুুলের ইশারায়
কেঁপে কেঁপে ওঠে
বজ্রধ্বনির কম্পিত স্বর
প্রতিটি বাঙালির ঠোঁটে
মুক্তির নিশানা বিদীর্ণ করে
পাক বাহিনীর বক্ষ।।
চেতনার স্ফুলিঙ্গ যেন
ঝরে ঝরে পড়ে
মহাজনতার বিস্ফোরণে
নূতন ইতিহাস গড়ে
প্রতি বাঙালি হঠাৎ যেন
হয়ে ওঠে দক্ষ।।