আবু রাইহান এর ছ’টি কবিতা

আবু রাইহান
আবু রাইহান
3 মিনিটে পড়ুন

আত্মজদের মুখ

বেঁচে থাকার অমোঘ প্রত্যাশায়
মায়াময় এই পৃথিবীতে
বেশিরভাগ মানুষই দীর্ঘজীবন চায়!
অথচ অহরহ আমি কেন যে মৃত্যুর কথা ভাবি
নিজস্ব কল্পনায় শেষ বিদায়ের দেখি ছবি
আর তখনই হঠাৎ করে ভেসে ওঠে আমার আত্মজদের মুখ
নিতান্তই অকিঞ্চিৎকর মনে হয়
ব্যক্তিগত প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির দুঃখ-সুখ!
অস্তিত্বে নাড়া দিয়ে যায় স্বপ্নীল সূর্যোদয়ের ভোর
তখন ফ্যাকাসে হয়ে আসে মৃত্যু চেতনার ঘোর
এভাবেই আমাদের প্রাত্যহিক বেঁচে থাকা
মৃত্যুর কথা ভেবে জীবনের ছবি আঁকা!

প্রিয় বৃষ্টির আশায় অপেক্ষমান

তোমার আকাশ জুড়ে মেঘ করেছে
আমার আকাশ ঝরায় রিমঝিম বৃষ্টি
আধো অন্ধকারে ঢাকা চারপাশ
বৃষ্টিদিনে হায় আবছায়া দূরদৃষ্টি !
বাইরে বৃষ্টি হলে ভেতর কাদা হয় না
ভেতরের কাদা আবহমান
প্রিয় বৃষ্টির আশায় অপেক্ষমান,
ভেতরে আসলে তেমন করে
কোনোদিনই বৃষ্টি হয় না !
সবুজ পাতা থেকে গড়িয়ে পড়া বৃষ্টি দেখে
তোমার কথা ভাবি একাকী নির্জন ঘরে
অথচ অনন্ত আকাশ জুড়ে এই পৃথিবীর
কোথাও না কোথাও অহরহ বৃষ্টি পড়ে!

রূপান্তর

তোমার প্রজ্বলিত ভালোবাসার আগুনে
বিগলিত আমার হৃদয়ের আকাশ
তোমার সান্নিধ্যেই পেয়েছি, অকল্পনীয়
মাধুর্যে পরিপূর্ণ ভালোবাসার নির্যাস!
তোমার সংস্পর্শ আমাকে করেছে প্রশান্ত
জাগতিক উদ্বেগে এখন আর
হই না ভারাক্রান্ত
তোমারই মধ্যে রয়েছে অপার্থিব আনন্দ
আমি এখন রূপান্তরিত মানুষ, যে ছিল দিকভ্রান্ত!

ভালোবাসা লিখি রাত্রির খামে

নতজানু আঁখিতে তোমার এই নিবিড় সমর্পিত দিন
আমার কাছে স্মৃতিচিহ্ন,আজন্ম ভালোবাসার ঋণ!
রাত্রির উষ্ণতা জারিত হে আমার নির্বাপিত কাম
তুমিই তো আমার জীবনের পরিসমাপ্তির বিশ্রাম!

- বিজ্ঞাপন -

আজন্ম আমি এক স্বপ্নবিলাসী অসুখী বিষন্ন বালক
আমাকে মোহমুগ্ধ করে তোমার উদ্ধত দুটি পালক
এখন যখন গোধূলির শেষে প্রতিদিন অন্ধকার নামে
আমি ভালোবাসা লিখি তোমার নামে, রাত্রির খামে!

স্পর্শের নিবিড় উষ্ণতায় সমর্পিত আমার শরীর মন
তোমার সঙ্গেই চাই কাঙ্খিত সুখের পিচ্ছিল অবগাহন!
মিলন পিয়াসী হে আমার লাস্যময়ী অস্থির প্রিয়তমা
তবে সঙ্গমে সিক্ত হোক ভালোবাসার এই যাপননামা!

অলৌকিক ডানা

যদিও জানি মৃত্যুতেই এ জীবনের চূড়ান্ত ক্ষয়
অনিবার্য মৃত্যু,সে তো অমোঘ প্রয়োজন
তবুও হিমশীতল আতঙ্কের মতো সারাক্ষন
চারপাশ জুড়ে এখন কেবল প্রবল মৃত্যু ভয়!

এখন মৌষনকাল-
গোধূলি সন্ধ্যায় বিষন্ন চাঁদের আলো দেখি
নির্জন রাত্রিকে কেন যে লাগে এতো ভালো
আমাকে সজীব করে মায়াবী সমুদ্রের কাঙ্খিত সুঘ্রাণ
মনে হয় অনন্ত আকাশ জুড়ে কেবল তুমিই দৃশ্যমান!

নিজের ভেতর অনুভব করি জন্ম মুহূর্তে
হারিয়ে ফেলা অলৌকিক ডানা,
তোমার কাছে পৌঁছানোর স্বপ্নই তো আমার আজীবনের সাধনা!

- বিজ্ঞাপন -

পড়ন্ত বিকেলের মায়া

হীরক পোতাশ্রয়ের পাশে বসে
মায়াবী কথা শুনি সান্ধ্য বাতাসে
ভালো লাগার মুহূর্ত গুলো হঠাৎ করে
ফেলে আসতে হয় মুক্তাঙ্গনের আকাশে,
ফেরিঘাটের নির্জন বটের ঝুরিতে তখন
একাকী রাত্রি নেমে আসে!
বিপরীত স্রোতের প্রবল টান,তবুও এপারে
ফিরিয়ে নিয়ে আসে নাছোড় জলযান
একান্ত আপন মনে হয় ইথার তরঙ্গে নিবিড় আহ্বান
অপার্থিব লাগে পড়ন্ত বিকেলের
এই মায়াময় ভালোবাসার টান!

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
জন্ম ১৯৭০ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামের সরবেড়িয়া গ্রামে! বর্তমানে কর্মসূত্রে বন্দর শিল্পনগরী হলদিয়ার বাসিন্দা! বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যায় এম এসসি এবং মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি থেকে বায়োটেকনোলজিতে এম.টেক! পেশায় হলদিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ডিগ্রী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সিনিয়র আধিকারিক! কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সংবাদপত্র ‘দিনদর্পণ’ পত্রিকার অ্যাসোসিয়েট এডিটর (সাহিত্য সম্পাদক)! ‘হলদিয়া সাহিত্য সংসদ’ এর সম্পাদক! ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘প্রমিতাক্ষর’ এর যুগ্ম সম্পাদক ! নতুন গতি মাসান্তিক সাহিত্য পত্রিকার উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য, কলকাতা, আলিয়া সংস্কৃতি সংসদের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য, কলকাতা! নব্বইয়ের দশকের কবি! কবিতা ছাড়াও প্রবন্ধ, গল্প ও নিউজ ফিচার লেখক! এখনো পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থ:নিষিক্ত ভালোবাসা (কাব্যগ্রন্থ ২০১৪), কুসুমের ফেরা প্রকাশনী, কলকাতা,সংকেতময় বিস্ময় (কাব্যগ্রন্থ,২০১৯), টার্মিনাস প্রকাশনী, কলকাতা, বাংলা কাব্য সাহিত্যে ইসলামী সমাজ ও সংস্কৃতি (প্রবন্ধগ্রন্থ ২০১৮ ), এডুকেশন ফোরাম, কলকাতা,ভালোবাসা লিখি রাত্রির খামে (কাব্যগ্রন্থ ২০২১) স্রোত প্রকাশনী, কলকাতা,ভালোবাসার খোয়াবনামা (কাব্যগ্রন্থ ২০২১), আবিষ্কার প্রকাশনী, কলকাতা, মুসলিম নবজাগরণের আলোকিত ব্যক্তিত্ব (প্রবন্ধগ্রন্থ ২০২১),আদর্শলিপি প্রকাশন, ঢাকা! ২০১৫ সালে পেয়েছেন ‘নিষিক্ত ভালোবাসা’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ‘কুসুমের ফেরা’ সাহিত্য পত্রিকার ‘কবি জসীমউদ্দীন স্মৃতি পুরস্কার’! ২০১৭ সালে কবিতা চর্চার জন্য পেয়েছেন ‘টার্মিনাস’ সাহিত্য পত্রিকার ‘সেরা কবির পুরস্কার’! ‘বঙ্গ প্রদেশ’ পত্রিকার পক্ষ থেকে সাহিত্য চর্চার জন্য ২০১৮ সালে পেয়েছেন ‘বঙ্গরত্ন সাহিত্য পুরস্কার’! ২০১৯ সালে পেয়েছেন বাংলাদেশ ঢাকার গাজীপুরে কবি সাযযাদ কাদির স্মৃতি সম্মাননা! ২০২০ সালে পেয়েছেন বাংলাদেশের ‘রবীন্দ্র-নজরুল ফাউন্ডেশন’ এর ‘সংহতি সম্মাননা’ এবং টাঙ্গাইল কবিতা উৎসবে মুজিব বর্ষ স্মারক সম্মাননা!
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!