এক আগস্টে কাজে যোগদান না করলে ও চাকরি থাকবে তা মেনে নিলাম! কিন্তু ঈদে ছুটির টাকা ও বেতন ভাতা’র সঠিক কোন সমাধান পেলাম না। বিজিএমই ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একই ভাষণ দিয়ে অনুরোধ করছেন, যে পহেলা আগস্ট কাজে যোগদান না করলেও চাকরি থাকবে। যেসব শ্রমিক ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গেছেন তারা যেন পাঁচ আগস্টের আগে কর্মস্থলে না ফিরেন। কি হাস্যকর অনুরোধ!
একদিকে গার্মেন্টস পক্ষ ফোনে শ্রমিকদেরকে আসার জন্যে বলতেছেন, অন্যদিকে না আসার জন্যে অনুরোধ করছেন। শ্রমিকদের কী পুতুল ভাবেন! আপনারা যে দিকে ইচ্ছে সে দিকে নাচাবেন!!
শ্রমিকরা পেটের দায়ে কেউ হেঁটে হেঁটে মধ্যপথে যেয়ে শোনতে পারছে আপনাদের ভিন্ন ভিন্ন ভাষণ। কেউ ফিরে বাড়ি যাচ্ছে আবার কেউ হেঁটে হেঁটে নিজ কর্মস্থলে পৌঁছার চেষ্টা করছে।
আপনাদের না আছে সিদ্ধান্তের কোন অটলতা, না আছে কোন সামঞ্জস্যতা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের শুধু গার্মেন্টস মালিকের পেটের ক্ষুধা চোখে পড়েছে। এ দিকে হাজার হাজার শ্রমিক না খেয়ে মরছে- তা চোখে পড়ে না।
যারা যানবাহন চালক তারা কি শ্রমিক না? যারা ছোটখাট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত- দোকানপাট, হকা্ হেলপা,-ড্রাইভার এরা কি শ্রমিক নয়?
যদি এরা শ্রমিকের আওতাভুক্ত হয়ে থাকে, তবে যানবাহন খুলে দেয়া হোক। খুলে দেয়া হোক দোকানপাট ব্যবসা বাণিজ্য। চলতে দেয়া হোক রিকশা থেকে নিয়ে জেলা বাস সহ অন্যান্য পরিবহণ। জারী করা হোক দিনমজুরের হকার কর্মে ফেরা প্রজ্ঞাপন। শুধু শিল্পকারখানা খুলে দিয়ে সরকার নিজে বাঁচার রঙিন স্বপ্ন দেখলে দেশ চলবে না।
গার্মেন্টস শ্রমিকরা কি মানুষ না? ওদের গায়ে কি করোনা সংক্রমণ হবে না? ওদের কী জীবনের কোনোও ঝুঁকি নেই ? যদি থেকে থাকে, তবে কেন ওদের কেই শুধু কর্মে ফিরে যেতে হবে?
ওহ্, যেতেই তো হবে। কারণ ওদের পরিশ্রমে সরকার বিজিএমই বিকেএমই বেতন পায়। ওদের টাকায় সরকার ও সরকারের সকল মন্ত্রনালয় চলে। তাহলে ওরা আসবে নাইবা কেন।
ওদের শ্রমের দামে সরকার, ওদের শ্রমের দামে শিল্পপতি, ওদের শ্রমের দামে বিজিএমই ও বিকেএমই। তবে ওদের সাথে এরূপ আচরণ কেন?
এখনও সময় আছে, আপনারা শ্রমিকদের নিয়ে ভাবুন, শ্রমিকের প্রতিটি জীবনের মূল্যায়ন করুন। শ্রমিক’রা কখনও আপনাদের বিপক্ষে অবস্থান নেবে না। তবে এটা শ্রমিকদের দুর্বলতা নয়, এটা শ্রমিকদের মানবতা। শ্রমিকরা আগেও সরকার ও মালিক পক্ষের সিদ্ধান্তে অটুট ছিলো আজও আছে।কিন্তু এই অটুট থাকার মানে এই নয় যে আপনারা যেমন করে মন চায় তেমন করে নাচাবেন। আপনারা শ্রমিকদের ভালোবাসতে শিখুন।