নাটোরের বড়াইগ্রামে আটঘরি মোল্লাপাড়া এলাকায় তুচ্ছ ঘটনায় একটি পরিবারকে সমাজচ্যুত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে প্রকাশ, সমাজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গোরস্থানের জন্য নির্ধারিত ৮ হাজার টাকার মধ্যে ৬ হাজার টাকা পরিশোধ করে ২ হাজার টাকা বাকী রাখায় ক্ষুদ্ধ হয় সমাজপতিরা।
আর এর জের হিসেবে সমাজচ্যুত করা হয় ওই পরিবারকে। এছাড়া ঈদ উল আযহার দিনে গরু কোরবানি দিতে সহযোগিতা প্রদানে নিষেধাজ্ঞা, স্থানীয় মসজিদ থেকে দানকৃত মাইক খুলে ফেলা, কৃষি জমিতে শ্রমিকদের কাজ করতে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়।
এই ঘটনা জানতে পেরে শুক্রবার বিকেলে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পান এবং তাৎক্ষণিক সমাজপতিদের সাথে জরুরি বৈঠকে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান তৈরি করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
জানা যায়, ঈদের ৩দিন আগে মোল্লাপাড়ার ওসমান সরদারের ছেলে কলেজ ছাত্র জিহাদ আহমেদকে সমাজপতিরা গোরস্থানের উন্নয়নের জন্য টাকা দিতে বলে। এসময় ২ হাজার টাকা বাকী রাখায় কিছুটা বাক-বিতন্ডা হয়। আর এরই জের ধরে ওসমান সরদারের পরিবারকে সমাজচ্যুত করার ঘোষণা দেন।
এ সময় সমাজপতি জমিন মৃধা, আসমান সরকার, জালাল প্রামাণিক, শাজাহান আলী, রেজাউল করিম, শাহাদ মন্ডল ও সাইদুর সরকার উপস্হিত ছিলেন।অভিযোগকারী ওসমান সরদার জানান, ‘সমাজপতিদের নিষেধাজ্ঞার কারণে ঈদের দিন গরু কোরবানির জন্য কেউ আসেনি।
পাশের গ্রাম থেকে মৌলভী ও কিছু লোক এনে কোরবানির কাজ করা হয়েছে। যা দুঃখজনক ও লজ্জার। কৃষি শ্রমিকরা সমাজপতিদের ভয়ে কাজ করতে রাজী না হওয়ায় ক্ষেতে পাট ও ভুট্টা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সমাজপতিদের এ জাতীয় নিষেধাজ্ঞা একঘরে করার মতো এবং ফতোয়াবাজিরই শামিল।
যা রীতিমতো মানবাধিকার লঙ্ঘন ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না বলে তিনি মনে করেন।’ সমাজপতি জামিন মৃধা জানান, ‘সাময়িক ভুল বোঝাবুঝিতে এমন ঘটনা ঘটেছে। ওসমান সরদার ঢাকায় আছেন। তিনি এলাকায় এসে একত্রে বসলে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।’
নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক রবিউল ইসলাম জানান, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ঘটনাটি খুবই তুচ্ছ বিষয়। সমাজপতিদের সাথে এ বিষয়ে খোলামেলা কথা হয়েছে। তারা নিষেধাজ্ঞার অভিযোগ সত্য নয় বলে জানিয়েছেন।
কৃষি শ্রমিক ওসমান সরদারের জমিতে যেকোনো কৃষি শ্রমিক কাজ করতে পারবে। এছাড়া মাইক যেহেতু তিনি মসজিদে দান করেছেন তা মসজিদেরই সম্পদ হিসেবে থেকে যাবে। আর ঈদে কোরবানীর বিষয়টা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা যা উভয় পক্ষ একত্রে বসে মীমাংসা করে নিতে পারবে।’