রাস্তার পাশে লাইন দিয়ে বস্তা বস্তা টাকা নিয়ে বসে আছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা সেখান থেকে তাঁদের প্রয়োজন মতো টাকা কিনছেন! ওই চাল, ভাল, তেল, নুন কেনার মতো।
কেউ ভাবতেই পারেন, এ রকম আবার হয় নাকি? হয় হয়। এ রকমই বেশ কিছু বিচিত্র বাজার রয়েছে আফ্রিকার একটি ছোট্ট দেশ— সোমালিল্যান্ডে। সেখানে বিক্রি হয় টাকা। জাল বা নকল টাকা নয়, এক্কেবারে আসল টাকা।
খোলা রাস্তায় দিন-দুপুরে ক্রেতারা বিনিময় প্রথার মাধ্যমে ব্যাগ ভরে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন রাশি রাশি টাকা। থুড়ি, টাকা নয়, সিলিং। আমাদের দেশের মুদ্রা যেমন টাকা, ওদের দেশের মুদ্রা হল— ‘শিলিং’।
মানব সভ্যতার শুরুতে বিনিময় প্রথার মধ্যে দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য হত ঠিকই, কিন্তু তা বলে এই একুশ শতকেও?
আসলে, এর জন্য একমাত্র সোমালিল্যান্ডের আর্থিক কাঠামোই দায়ী। শিলিংয়ের দাম ব্যাপক ভাবে কমে যাওয়ার ফলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
২০০০ সালে যেখানে এক ডলার মানে ভারতীয় মুদ্রা ছিল ৫৪ টাকা, সেখানে সোমালিল্যান্ডে এক ডলার ছিল ১০ হাজার শিলিংয়ের কাছাকাছি।
২০১৭ সালের প্রথম দিকে এক ডলার ছিল ৯ হাজার শিলিংয়ের সমান। তাই ডলার বা ইউরোর নিরিখে সামান্য খরচ করলেই পাওয়া যেত কয়েক কেজি নোট!
শিলিংয়ের এমন মূল্যহীনতার কারণেই সোমালিল্যান্ডের মুদ্রার গুরুত্ব ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। শিলিংয়ের দাম ওখানে এতটাই কম যে, ওই মুদ্রার বাজারে লাট দেওয়া বস্তা বস্তা টাকা থাকলেও কোনও অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই!
ডাকাত তো দূরের কথা, চোর-ছিনতাইবাজ, এমনকি ছিঁচকে চোরেরাও এই শিলিং চুরি করতে আসে না। ফলে, রাস্তার পাশে ফুটপথের উপরেই ফেলে রেখে বিক্রি হচ্ছে শুধু কেজি কেজি নয়, টন টন শিলিং।