বরগুনায় যৌন হয়রানি সহ্য করতে না পেরে মায়ের কাছে চিঠি লিখে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সামিরা (১৪) নামের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় বরগুনা শহরের একটি বাসার বাথরুম থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার (৫ জুন) বরগুনা পৌর শহরে কলেজ রোডে আবুল বাশারের বাসায়। ইতোমধ্যে কিশোরীর আত্মহত্যার জন্য অভিযুক্ত জামাল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, সামিরার মা সুমী বেগম রফিকের প্রথম স্ত্রী। সামিরা হচ্ছে রফিকের সন্তান। সুমী তার তার সন্তান সামিরাকে নিয়ে বর্তমান স্বামী রাশেদের সঙ্গে পৌরসভার কলেজ রোডে আবুল বাশারের বাসায় ভাড়া থাকেন। আবুল বাশারের ছেলে জামাল হোসেনের স্ত্রী সন্তান থাকা সত্ত্বেও কিশোরী সামিরাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত এবং একাধিকবার সামিরাকে শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করেছে জামাল।
এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সামিরা ও জামালকে জড়িয়ে প্রতিবেশীরা মুখরোচক অপবাদ করতে শুরু করেছিল।
গতকাল রোববার রাতে সুমী বেগম বাসার মালিক আবুল বাশারকে মোবাইল করে তার ছেলের কুকর্মের কথা জানায়। আবুল বাশার গ্রামের বাড়ি থেকে এসে জামালকে শাসন করবে বলে আশ্বস্ত করেছিল। জামালের সঙ্গে সামিরাকে জড়িয়ে দুর্নাম রটনা তার মা বিশ্বাস করতে পারছিল না। মা ছাড়া সবাই সামিরাকে গালমন্দ করেছে। এ অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করে সামিরা। আর আত্মহত্যার আগে সামিরা তার মায়ের কাছে চিঠি লিখে রেখে গেছে।
চিঠিতে সামিরা লিখেছে, ‘মা আমার নামে তারা যে বদনাম উঠিয়েছে তাতে আমি এই পৃথিবীতে থাকতে পারি না। আমি একটি খারাপ মেয়ে, আমি নাকি খুব খারাপ। মা, তুমি ভাল থাক। আমাকে কেহ বিশ্বাস করে না তুমি ছাড়া।’
ইতি, তোমার সামিরা।’
সামিয়ার মা সুমি আক্তার বলেন, শনিবার বাথরুমে সামিরা গোসল করার সময় জামাল উকি দিয়ে সামিরাকে দেখে। সামিরা জামালকে পানি ছুঁড়ে মারে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জামাল অশ্লীল গালি দেয়। জামালের অত্যাচারে সামিরা অস্থির ছিল। সব সময় জামাল সামিরার পিছনে লেগে থাকত। আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য জামালই দায়ী। আমি জামালের ফাঁসি চাই।
বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম তারিকুল ইসলাম জানিয়েছে, জামালকে আটক করা হয়েছে। মেয়ের মা বাদী হয়ে মামলা করবেন। সামিরার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।