স্বামী-স্ত্রী দুজনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষার্থী ছিলেন। ১৪ বছর আগে ভালবেসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন দু’জন মানুষ। মাত্র দুই বছর আগে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। বাবা-মায়ের এই বিচ্ছেদের ঘটনায় দশ বছর বয়সী একমাত্র কন্যা সন্তান কার জিম্মায় থাকবেন- এই নিয়ে তারা আদালতে মামলা করেন।
কন্যা সন্তানকে নিজ হেফাজতে নিতে আবেদন করেন পিতা। সেই আবেদন মঞ্জুর করছে ঢাকার পারিবারিক আদালত। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন সন্তানের মা। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের একক ভার্চুয়াল বেঞ্চ পারিবারিক আদালতের আদেশ রবিবার স্থগিত করে দেন। একইসঙ্গে ঐ সন্তানকে মায়ের জিম্মায় রাখার আদেশ দিয়ে হাইকোর্ট বলেছে, বাবা চাইলে সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।
জানা গেছে, বাবা ও মা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষার্থী থাকাকালীন সময়ে তাদের মধ্যে পরিচয় ঘটে। এরপরে বন্ধুত্ব ও প্রেমে পড়েন। ২০০৭ সালে তারা বিয়ে করেন। ২০১১ সালে তাদের কন্যা সন্তান হয় এবং সে একটি স্কুলে পড়াশুনা করে। পারিবারিক টানাপোড়েন ও নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্য থেকে ২০১৯ সালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তখন সন্তান ছিলো মায়ের কাছে। পরে বাবা সন্তানকে নিজের জিম্মায় নিতে পারিবারিক আদালতে মামলা করেন।
প্রথমে মায়ের জিম্মায় রাখার আদেশ দেন গত ১৬ জুন। ৩০ জুন ওই আদেশ স্থগিত করে পারিবারিক আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ বলেন, আগামী ২১ দিন সন্তান পিতার হেফাজতে থাকবে। তার মধ্যে মায়ের হেফাজতে থাকবে শুক্র ও শনিবার। বাবা সন্তানের অনলাইনে স্কুলের ক্লাসের ব্যবস্থা করবেন। নিম্ন আদালতের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন সন্তানের মা।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। শুনানি শেষে পারিবারিক আদালতের আদেশ ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করে দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে স্বাভাবিক কোর্ট খোলার পর বিষয়টি পরবর্তী আদেশের জন্য উপস্থাপন করতে আইনজীবীকে নির্দেশ দেয় আদালত।