সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বর (ব্ল্যাক হোল) মহাবিশ্বের সবচেয়ে রহস্যময় এবং শক্তিশালী মহাকর্ষীয় বস্তু। এগুলি সাধারণত ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং তাদের ভর সূর্যের ভরের কয়েক লাখ বা কয়েকশো কোটি গুণ বেশি হতে পারে। তাদের মহাকর্ষীয় প্রভাব এত শক্তিশালী যে, আলোসহ কোনো কিছুই তাদের ইভেন্ট হরাইজন (ঘটনা দিগন্ত) অতিক্রম করার পর ফিরে আসতে পারে না।
সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বরের কার্যকারিতা:
- আকৃষ্টকরণ: সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বর তাদের চারপাশের মহাকাশীয় পদার্থ, যেমন গ্যাস, ধুলো, এবং নক্ষত্রদের আকর্ষণ করে। এই পদার্থগুলি তাদের দিকে চলে আসে এবং কৃষ্ণগহ্বরের মহাকর্ষীয় প্রভাবে কেন্দ্রীভূত হয়।
- অ্যাক্রিশন ডিস্ক গঠন: কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে আগত পদার্থগুলি উচ্চ বেগে ঘূর্ণায়মান অ্যাক্রিশন ডিস্ক গঠন করে। এই ডিস্কের ঘর্ষণের ফলে তীব্র তাপ উৎপন্ন হয়, যা এক্স-রে বিকিরণ হিসেবে নির্গত হয়। এই বিকিরণগুলি মহাকাশে পর্যবেক্ষণ করা যায় এবং কৃষ্ণগহ্বরের উপস্থিতি ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য প্রদান করে।
- জেট নির্গমন: কিছু সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বর তাদের খুঁটি বরাবর শক্তিশালী জেট নির্গত করে, যা মহাকাশে বিপুল পরিমাণ পদার্থ ও শক্তি প্রেরণ করে। এই জেটগুলি কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশের মহাকাশীয় পরিবেশে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।
সাম্প্রতিক গবেষণা:
গবেষকরা সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বরের ঘূর্ণন এবং তাদের চারপাশের স্থান-কালের বিকৃতি নিয়ে অধ্যয়ন করছেন। নাসার চন্দ্র এক্স-রে অবজারভেটরি ব্যবহার করে স্যাগিটেরিয়াস এ নামক সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বরের ঘূর্ণন সম্পর্কিত নতুন তথ্য পাওয়া গেছে, যা স্থান-কালের পরিবর্তন সম্পর্কে মূল্যবান ধারণা প্রদান করে।
সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বর মহাবিশ্বের বৃহৎ কাঠামোর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের কার্যকারিতা মহাকর্ষীয় আকর্ষণ, অ্যাক্রিশন ডিস্কের গঠন, এবং জেট নির্গমনের মাধ্যমে মহাবিশ্বের অন্যান্য বস্তুর উপর প্রভাব ফেলে। তবে, এই প্রক্রিয়াগুলির বিস্তারিত সমঝোতা এখনও চলমান গবেষণার বিষয়, যা ভবিষ্যতে মহাবিশ্বের গঠন ও বিবর্তন সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে।