ছোট বেলা থেকেই ইলিশ এর প্রতি রুদ্রের একটা আবেগ কাজ করে। তবে বাজারে এখন ইলিশের যে দাম তাতে দোকানির সামনে দাম জেনে আসা মাত্র কেনা আর হয়না। ইলিশের যে দামই হোক মাসে কয়েকবার রুদ্রের ইলিশের স্বাদ চাখা হয় এর ওর বাড়ি দাওয়াত খেয়ে।
ফ্রি ফ্রি ইলিশ এর এই স্বাদ চাখা ইদানিং রুদ্রের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এইতো সেদিন ব্যবসায়ী বন্ধু জগার মেয়ের বিয়ে হয়। খাবারে মেন্যুতে সরষে ইলিশ ছিলো চোখে পড়ার মতো। রুদ্র কি তা এড়িয়ে যাওয়ার পাত্র…
বন্ধুর জোরাজুরিতে দ্বিতীয় পিচ খেতে গিয়ে গলায় আটকে পরে প্রিয় ইলিশের কাটা। এভাবে খেতে গিয়ে কয়েকবার তার গলায় ইলিশের কাটা আটকে পরে আর হোমিওপ্যাথিকের এক ফোঁটা দু ফোঁটা খেয়ে কাটা নামানো। বউ বলে, বিলাইয়ের পা ধরো।
তবে মজার বিষয় হলো এই পর্যন্ত রুদ্রের গলায় ইলিশের মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত সব অঙ্গেরই কাটা বিঁধেছিলো। রুদ্র এই ব্যাপারটি হয়তো খেয়াল করেনি। যাই হোক একদিন পর পহেলা বৈশাখ। এইদিন ইলিশ না হলে নয়। কিন্তু ইলিশের যে দাম তাতে দোকানির সামনে না যাওয়াই শ্রেয়। এইদিকে গিন্নি বকাবকি শুরু করেছে, বছরের প্রথম দিন ভালো-মন্দ না খেলে নয়। রুদ্র সঙক্রান্তি দিনের পাচনের আয়োজন করে স্নান করতে পুকুরে চলে যায়। লুঙ্গির কোচা মেরে রুদ্র মাঝ পুকুরে সাঁতার কেটে ঘাটের কিনার এসে ডুব দেয়। এক, দুই করে তিন ডুব দেয়ার সময় রুদ্রের মনে হল তার গলা দিয়ে কি যেন বের হয়ে গেল। তার শরীর কিছুটা যেন হালকা হয়। স্নান শেষে লুঙ্গি ছাড়তে গিয়ে রুদ্র যেন আকাশ থেকে পড়ে। কোছা থেকে একটা দেড়কেজি ওজনের ইলিশ মাটিতে!
রুদ্রের বুঝতে দেরি হয়নি তৃতীয় ডুবের সময় এই ইলিশটিই তার গলা দিয়ে বেরিয়েছে। হয়তো তার গলায় বিধে যাওয়া কাটাগুলোই এই পূর্ণাঙ্গ ইলিশটি। কি হবে এতো ভাবাভাবি করে রুদ্র মাছটিকে নিয়ে বাড়ি ফিরে…