সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলার ঘটনায় নিহত ১৩ জন পুলিশ সদস্যের ময়নাতদন্ত আজ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। ফলে এ ঘটনায় নিহত পুলিশ সদস্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ জনে।
রোববারের সহিংসতায় সিরাজগঞ্জ জেলায় এখন পর্যন্ত ২৫ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ সদর দপ্তর ও রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বিজয় বসাক বিবিসি বাংলাকে জানান, রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তাদের সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরাও যোগ দেন। পরে তারা একে একে পুলিশের মরদেহগুলো উদ্ধার করেন। কিছু মরদেহ স্তুপ করে রাখা ছিল, কিছু আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। তিনটি মরদেহ পুকুরে এবং একজনকে পাশের একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
সেনাসদস্যরা লাশগুলো উদ্ধার করে হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান। সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হান্নান মিয়া জানান, “দুপুরে আন্দোলনকারীরা থানা ঘেরাওয়ের চেষ্টা করলে ওসি তাদেরকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে দেন। পরে তারা বিরাট সংখ্যায় এসে থানা ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।”
তিনি আরও বলেন, “এসময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ছাদে উঠে এবং বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেয়। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা থানার ভেতরে ঢুকে পুলিশ সদস্যদের বেধড়ক পিটিয়ে মারে।”
থানার ভেতর থেকে ১৩ পুলিশের লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি আরও ১৪ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে এক সাংবাদিকসহ ছয় জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আন্দোলনকারীরা সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরির বাসা থেকে দুজনের কঙ্কাল উদ্ধার করেছেন। জানা গেছে, রোববার দুপুরের দিকে আন্দোলনকারীরা তার বাসায় হামলা করে। এ সময় ভেতরে থাকা নেতাকর্মীরা দ্রুত বেরিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর আন্দোলনকারীরা বাসায় আগুন ধরিয়ে দেয়। রাতে ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর পর ভেতর থেকে দুজনের সম্পূর্ণ পোড়া দেহ বা কঙ্কাল উদ্ধার করেন। ধারণা করা হচ্ছে, বাইরে হামলা ও অগ্নি সংযোগের সময় তারা ভেতরে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
এছাড়া, সিরাজগঞ্জ সদরে সহিংসতায় একজন যুবদল ও একজন ছাত্রদল কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক শরীফুল ইসলাম।