ভারতের উপকূলে ইসরায়েলি জাহাজে হামলা করেছে ইরানি ড্রোন: যুক্তরাষ্ট্র
আরব সাগরের ভারতীয় উপকূলে গতকাল শনিবার সকালে রাসায়নিক বহনকারী ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট জাহাজটিতে ইরানি ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে। ওই ঘটনায় বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও কেউ হতাহত হয়নি।
পেন্টাগনের একজন মুখপাত্র বলেন, ইরান থেকে নিক্ষেপ করা ড্রোনটি লাইবেরিয়ার পতাকাযুক্ত, জাপানি মালিকানাধীন এবং নেদারল্যান্ডস পরিচালিত কেম প্লুটো নামের রাসায়নিক ট্যাংকারকে স্থানীয় সময় শনিবার সকালে ভারতের উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে আঘাত হানে।
হামলার ফলে জাহাজটিতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং ট্যাংকারটিতে লাগা আগুনও দ্রুত নিভিয়ে ফেলা হয়েছে। পেন্টাগন এক বিবৃতিতে বলেছে, ২০২১ সালের পর থেকে পণ্যবাহী জাহাজে এটা ইরানের সপ্তম হামলা।
এ ঘটনার ব্যাপারে জাতিসংঘে ইরানি প্রতিনিধি দলের একজন মুখপাত্রকে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করার অনুরোধ জানিয়ে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
গতকাল ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ইউনাইটেড কিংডম মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস অ্যন্ড মেরিটাইম সিকিউরিটি ফার্ম অ্যামব্রে জানায়, ভারতের উপকূলে পণ্যবাহী নোযানটি ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে। লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী রাসায়নিক/পণ্যের জাহাজটি ইসরায়েলে পণ্য আনা নেওয়া করে বলেও জানায় সংস্থাটি।
হামলায় জাহাজের কিছু কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে এবং পাটাতনে পানি প্রবেশ করেছে। হামলার শিকারের আগে জাহাজটি সর্বশেষ সৌদি আরবকে ফোন করেছিলেন এবং ভারতের দিকে যাচ্ছিল।
এই ঘটনায় গত ৭ অক্টোবরের পর আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধি সহ জাহাজ চলাচলের নৌপথে ক্রমাগত নতুন ঝুঁকির সৃষ্টির চিত্রকেই তুলে ধরেছে। ইরান এবং তাদের মিত্র দেশ ইয়েমেন বেশ কয়েকবারই গাজায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নির্বিচার হামলার সমালোচনা করে পাল্টা আঘাতের ঘোষণা দিয়েছে।
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা কিছুদিন আগে বলেছে, লোহিত সাগর দিয়ে ইসরায়েলগামী কোনো জাহাজকেই যেতে দেওয়া হবে না। গাজায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা ‘অপরাধ’ বন্ধ না করলে ভূমধ্যসাগর বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর একজন কমান্ডার।
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় আগ্রাসন শুরু করেছে ইসরায়েল। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অপরাধযজ্ঞে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলমান হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে গাজায় ২০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছে প্রায় ৫৩ হাজার। গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।