৮ হাজার শিশুসহ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ছাড়াল ২০০০০
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় চলা ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে শিশু ও নারীর সংখ্যাই ১৪ হাজারের বেশি। এ ছাড়া অন্তত ৬ হাজার মানুষ এখনো নিখোঁজ। গাজার জনসংযোগ অফিসের বরাত দিয়ে তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজার জনসংযোগ অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে গতকাল বুধবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে—অবরুদ্ধ গাজায় সব মিলিয়ে ২৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও নিখোঁজ হয়েছে ইসরায়েলি হামলার কারণে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গাজার বিভিন্ন হাসপাতালের হিসাব অনুসারে ২০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৮ হাজার শিশু ও ৬ হাজার ২০০ নারী।’

নিহতদের মধ্যে ডাক্তার-নার্সসহ অন্তত ৩১০ জন চিকিৎসাকর্মী, ৩৫ জন সিভিল ডিফেন্সের সদস্য এবং ৯৭ জন সাংবাদিক বলেও জানিয়েছে গাজার জনসংযোগ অফিস।
ইসরায়েলি হামলায়, গাজা উপত্যকাজুড়ে ৩ লাখ ৮ হাজার ইউনিট বাড়িঘর-অ্যাপার্টমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর বাইরে, ১১৪টি মসজিদ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও অন্তত ২০০ মসজিদ। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় ১২৬টি সরকারি ভবন পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ২৮৩টি ভবন। পাশাপাশি এই যুদ্ধের কারণে, ৯০ টিরও বেশি স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার জন্য আজ বুধবার মিসরে পৌঁছেছেন হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া। সেখানে গাজায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানো এবং বন্দী মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হবে। ইসমাইল হানিয়ার এই প্রকাশ্য কূটনীতির তাৎপর্য প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, তার হস্তক্ষেপে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে গত নভেম্বরের শুরুতে শেষবার তিনি মিসর সফর করেছিলেন। এরপরই ঘোষিত হয় এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি—যাতে ১০০ জনেরও বেশি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।

আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটি সূত্র জানিয়েছে যে, বৈঠকে উপস্থিত কূটনীতিকরা আলোচনা করেছেন যে, গাজায় হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে কারা নতুন যুদ্ধবিরতিতে মুক্তি পাবে এবং বিনিময়ে ইসরায়েল কোন বন্দীদের মুক্তি দিতে পারে।

জিম্মিদের মধ্যে সকল নারী এবং অসুস্থ পুরুষদের মুক্তি দেওয়ার জন্য এরই মধ্যে জোর দিয়েছে ইসরায়েল। সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানিয়েছে, গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ফিলিস্তিনিরা মুক্তি পাওয়ার তালিকায় থাকতে পারে। আলোচনাকে ফলপ্রসূ বলে বর্ণনা করে সূত্রটি বলেছে যে, কয়েক দিনের মধ্যে একটি অগ্রগতি দেখা যেতে পারে।