গাজাকে কেন্দ্র ইসরায়েলের সঙ্গে ‘প্রকৃত যুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়েছে হিজবুল্লাহ
গাজাকে কেন্দ্র করে চলমান হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহও। রুশ সংবাদমাধ্যম আরটিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে হিজবুল্লাহর মুখপাত্র হাজি মোহাম্মদ আফিফ বলেছেন, হিজবুল্লাহ নিয়মিত ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনীর (আইডিএফ) অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় একটি ফ্রন্ট চালু করে দিয়েছে।
লেবাননের শিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর দাবি, তাদের কাছে প্রায় ১ লাখ সেনা রয়েছে। রয়েছে বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম। এমনকি বিপুল পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত রয়েছে বলেও দাবি করেছে গোষ্ঠীটি। ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সহানুভূতিশীল এই গোষ্ঠী বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনীর বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে।
হাজি মোহাম্মদ আফিফ বলেন, ‘আমরা এই যুদ্ধের একটি অংশ।’ এ সময় তিনি দাবি করেন, দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি হামলা সেই ‘প্রকৃত যুদ্ধেরই নিদর্শন’। যদিও লেবানন ও ইসরায়েল এখনো একে অপরের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি, তবে ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক গোলা হামলা চালিয়েছে। মোহাম্মদ আফিফের দাবি, ইসরায়েলি হামলার কারণে কয়েক হাজার লেবানিজ তাদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘প্রকৃত যুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়লেও ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ এখনো বড় পরিসরে যুদ্ধ করছে না বলেও দাবি করেন মোহাম্মদ আফিফ। এ সময় তিনি বলেন, হিজবুল্লাহ বর্তমানে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তার শক্তিমত্তার মাত্র ৫ শতাংশ প্রদর্শন করছে। তিনি বলেন, ‘এটি খুবই স্বাভাবিক। হিজবুল্লাহ তার পূর্ণাঙ্গ শক্তি ব্যবহার করছে না। যেমনটা রাশিয়ার সেনাবাহিনীও ইউক্রেনে তার পূর্ণাঙ্গ শক্তি ব্যবহার করছে না।’
তবে হিজবুল্লাহ যুদ্ধের বর্তমান গতি বজায় রাখতে চায় বলে জানান আফিফ। তিনি বলেন, ‘আমাদের এই যুদ্ধ ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যেই পরিচালিত।’
তবে হিজবুল্লাহকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে না জড়াতে ইসরায়েল একাধিকবার হুমকি দিয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত একাধিকবার বলেছেন, হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়ালে বৈরুতকে গাজায় পরিণত করা হবে।
উল্লেখ্য, গত মাসেই হামাসের এক শীর্ষ নেতা বলেছিলেন, হিজবুল্লাহ তখনই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবে, যখন হামাস গাজা থেকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।