ইউক্রেনকে দেওয়া ইইউ’র ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা আটকে দিল হাঙ্গেরি
ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদ দেওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করার অনুমতি দিয়েছেন জোটের সদস্য দেশগুলোর নেতা। যে বৈঠকে এই অনুমতি দেওয়া সেখানে দ্বিমত পোষণ করায় বের হয়ে যেতে হয় হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অবরানকে। প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফ থেকে ইউক্রেনকে দিতে যাওয়া ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা প্রস্তাব আটকে দিয়েছেন তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উল্লিখিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিনে বৈঠকে নাটকীয়তার সৃষ্টি হয়। ইউক্রেনের সদস্যপদ নিয়ে আলোচনার বিষয়টি প্রস্তাব আকারে উত্থাপিত হলে মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। পরে তিনি বৈঠক ছেড়ে চলে গেলে জোটের বাকি ২৬ সদস্য দেশ প্রস্তাবটিতে সম্মতি দেয়। অরবানকে আলোচনার টেবিল ছেড়ে চলে যেতে সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ।
উক্ত বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পর ব্রাসেলসে ইউক্রেনকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে অরবান উল্লেখ করেন, আগামী ৪ বছর ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তরফ থেকে এই ৫০ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেওয়া যাবে না।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন অরবান নিজেই। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, ‘আজ রাতের বৈঠকের সারমর্ম হলো—ইউক্রেনকে অতিরিক্ত সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাবে ভেটো।’ তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমরা এই বিষয়টি নিয়ে সামনের বছর আবারও আলোচনার জন্য ইউরোপীয় কমিশনে যাব পর্যাপ্ত প্রস্তুতিসহ।’
এর আগে, ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যপদ দেওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করার অনুমতি দেন জোটের সদস্য দেশগুলোর নেতারা। হাঙ্গেরির আপত্তির পরও রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই ইইউভুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচন চলবে। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার ইইউ নেতারা এই অনুমতি দেন।
আলোচনা শুরু হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে ইউক্রেনের আরও কয়েক বছর লাগবে। কিন্তু গতকালের সিদ্ধান্তের ফলে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সৃষ্ট অচলাবস্থার অবসান হলো। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং পশ্চিমা বিশ্বের আরও কাছাকাছি এল। যা ইউক্রেনকে মস্কোর নিয়ন্ত্রণ থেকে বের হতে কৌশলগতভাবে সহায়তা করবে।
এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এল যখন, ইউক্রেনের বহুল আলোচিত পাল্টা আক্রমণ রাশিয়ার বিরুদ্ধে আক্ষরিক অর্থেই কোনো অগ্রগতি লাভে ব্যর্থ হয়েছে এবং দেশটির সবচেয়ে বড় সহায়তাদাতা দেশ যুক্তরাষ্ট্র কিয়েভকে সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে তহবিল সংকটে ভুগছে।