গাজায় ইসরায়েলের বোমা হামলায় জার্মান পরিবারের ৬ সদস্য নিহত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বোমা হামলায় জার্মানির এক পরিবারের ৬ সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহত ওই ছয়জনের মধ্যে একজন ছিলেন চিকিৎসক। গত অক্টোবরের শেষের দিকে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারান তারা। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় এক জার্মান পরিবারের ৬ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জার্মান গণমাধ্যম। নিহতদের একজন হচ্ছেন ইউসুফ আবুজাদাল্লাহ, তিনি জার্মানিতে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতেন।
জার্মান সংবাদপত্র সদেউৎশে জেইটুং-এর মতে, গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলার ফলে ইউসুফ আবুজাদাল্লাহর পাশাপাশি তার স্ত্রী আয়া এবং তাদের সন্তান সালাহউদ্দিন (১০), মোহাম্মদ (৯) আব্দুল রহমান (৩) এবং ওমর নামে এক অল্পবয়সী শিশুও নিহত হয়েছেন।
ইউসুফ আবুজাদাল্লাহ ডর্টমুন্ডের একটি হাসপাতালে কাজ শুরু করার আগে তার পরিবারের সাথে দেখা করতে গাজা যান। এখানে কেনা একটি জমিতে তিনি বাড়ি তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তবে গত ২৫ অক্টোবর ইসরায়েলি হামলার ফলে তিনি যে বাড়িতে তার পরিবারের সাথে থাকতেন সেই ঘরেই তিনি মারা যান।
ইউসুফ আবুজাদাল্লাহর ভাই আহমেদ আবুজাদাল্লাহ বলেছেন, তারা দুই সপ্তাহ পর ধ্বংসস্তূপ থেকে তার ভাই এবং তার পরিবারের সদস্যদের মৃতদেহ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
জার্মান পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ‘দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের এখন ধরে নিতে হবে যে, গাজার সংঘাতে নিহতদের মধ্যে একটি জার্মান পরিবারও রয়েছে।’
মূলত ইসরায়েলি বোমা হামলার ফলে গাজায় মারা যাওয়া প্রথম জার্মান নাগরিক হচ্ছেন আবুজাদাল্লাহ এবং তার পরিবার।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
মাঝে হামাসের সাথে এক সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর গত সপ্তাহ থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরায়েল। বিরতির পর শুরু হওয়া এই অভিযানে গাজায় হামলা আরও তীব্র করেছে দখলদার সেনারা।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে সেখানে কমপক্ষে ১৭ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৪৬ হাজার মানুষ বেশি আহত হয়েছেন।
নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কমপক্ষে ৭ হাজার ১১২ জন শিশু এবং ৪ হাজার ৮৮৫ জন নারী রয়েছেন। এছাড়া ভূখণ্ডটিতে এখনও প্রায় ৭ হাজার ৬০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।