ভারতের মণিপুরে ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধ, নিহত অন্তত ১৩

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

ভারতের মণিপুরে ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধ, নিহত অন্তত ১৩

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে অজ্ঞাত দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মাঝে ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন বলে রাজ্যের জ্যেষ্ঠ এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। সোমবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে মণিপুর নতুন করে সংঘাতে প্রাণহানির এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, জাতিগত সহিংসতায় মণিপুরে ১৮০ জনের প্রাণহানির ঘটনার সাত মাস পর বন্দুকযুদ্ধের এই ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের কর্মকর্তারা বলেছেন, মণিপুরের তেংনোপাল জেলার একটি গ্রামে ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধের খবর পাওয়া গেছে। পরে ওই এলাকা থেকে ১৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। যাদের প্রত্যেকের শরীরে বুলেটের একাধিক আঘাতের ক্ষত রয়েছে।

ভারতের মণিপুরে নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুট, পুলিশ নিহত
জাতিগত সহিংসতায় মণিপুরে ১৮০ জনের প্রাণহানির ঘটনার সাত মাস পর বন্দুকযুদ্ধের এই ঘটনা ঘটেছে। ছবি পিটিআই

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজ্য পুলিশের জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তা টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, উদ্ধারকৃত মরদেহের পাশে কোনো ধরনের অস্ত্র পাওয়া যায়নি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘‘তাদের হত্যার পর অস্ত্র লুট করে নেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’’

পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের কিংবা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া গোষ্ঠী দু’টির পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

- বিজ্ঞাপন -

চাকরিতে কোটা এবং জমির অধিকার নিয়ে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতি ও সংখ্যালঘু কুকি-জো সম্প্রদায়ের মাঝে গত ৩ মে জাতিগত সহিংসতার সূত্রপাত হয়। এরপর থেকে কয়েক মাস ধরে রাজ্যজুড়ে দুই সম্প্রদায়ের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে।

মেইতি সম্প্রদায়ের চাকরি ও কলেজে ভর্তির কোটার দাবির প্রতি আদালতের ইতিবাচক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করে কুকি-জো সম্প্রদায়। দীর্ঘদিন ধরে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, মেইতি সম্প্রদায় বর্তমানে উপজাতি গোষ্ঠীগুলোর জন্য সংরক্ষিত এলাকায় জমি কেনার অনুমতি পাবে। কুকি-জো সম্প্রদায় আদালতের এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ।

ভারতের মণিপুরে ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধ, নিহত অন্তত ১৩
মণিপুর জুড়ে এখনও চলছে সেনাবাহিনীর টহল

মণিপুরের মেইতি এবং কুকি সম্প্রদায়ের মাঝে জাতিগত দাঙ্গা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৮০ জনের প্রাণহানি এবং ৫০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী ৩২ লাখ বাসিন্দার এই রাজ্যে বিশৃঙ্খলার শুরু হয়েছিল মে মাসে।

রাজ্যের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে কুকি গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। এর ফলে সেখানে দফায় দফায় আন্দোলন হয়। মণিপুর রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ৬৪ শতাংশ মেইতি সম্প্রদায়ের। তারপরও ওই রাজ্যের মোট ভূখণ্ডের মাত্র ১০ শতাংশের মালিকানা এই সম্প্রদায়ের সদস্যদের হাতে রয়েছে। ভারতের এই রাজ্যে তফসিলি উপজাতিদের বাইরে পাহাড়ী এলাকায় অন্য কারও জমি কেনার অনুমতি নেই।

ভারতের মণিপুরে আরও দুই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা
মণিপুরে কয়েক মাস ধরে রাজ্যজুড়ে দুই সম্প্রদায়ের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে । ছবি এএনআই

কয়েক মাস আগে ভারতের হাইকোর্ট মেইতি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিদের তালিকার অন্তর্ভূক্ত করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়। হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। মেইতি সম্প্রদায়ের সদস্যরা তফসিলি উপজাতিদের তালিকায় ঠাঁই পেলে রাজ্যে জমি কেনার অনুমতি পাবেন।

- বিজ্ঞাপন -

মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতি ও সংখ্যালঘু কুকি-জো সম্প্রদায়ের মাঝে ছড়িয়ে পড়া জাতিগত সহিংসতার ঘটনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের নিরাপত্তা ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হয়। রাজ্যটির ক্ষমতায়ও আছে মোদির রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।

সূত্র: রয়টার্স, টাইমস অব ইন্ডিয়া।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!