যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শর্তসাপেক্ষে বাড়াতে চায় ইসরায়েল ও হামাস
গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির মেয়াদ সোমবারের পরেও বাড়ানোর দিকে ইঙ্গিত করেছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তবে দুই পক্ষই এর জন্য শর্ত জুড়ে দিয়েছে।
গতকাল রোববার বার্তা পাঠানোর প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, চার দিনের যুদ্ধবিরতির পরেও এর মেয়াদ বাড়ানো যায় কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইসরায়েলের কারাগার থেকে বেশিসংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে জোরদার তৎপরতা দেখা গেলে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে তারা আগ্রহী বলে জানিয়েছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধবিরতি শেষে পুনরায় অভিযান চালানোর ব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাশাপাশি, যুদ্ধ শুরুর আগে সর্বোচ্চসংখ্যক জিম্মির মুক্তি বাস্তবায়নের দিকেও তাকিয়ে আছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্র, মিসর এবং কাতারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। গতকাল রোববার ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক করেছিল। হামাস যদি প্রতিদিন ১০ জন করে জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে একদিন করে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে বলে শর্তের কথা বলেছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা।
আজ সোমবার শেষ হতে যাওয়া যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়ানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত রোববার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে বাইডেন বলেন, সোমবার অতিক্রম করে যুদ্ধবিরতি সম্প্রসারিত করাই যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য- যাতে আরও বেশি জিম্মিকে বের করে আনা যায়। সে সঙ্গে গাজায় প্রয়োজনীয় মানবিক ত্রাণ পৌঁছানোও বাড়ানো যাবে।
তবে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে আশাবাদী নন কাতারের নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইব্রাহিম আবুশরিফ। আল জাজিরাকে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে আসা বাগাড়ম্বর থেকে বোঝা যায় যে, তারা তাদের বোমা হামলা এবং হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাবে। আমার খুব বেশি আশা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এই যুদ্ধবিরতি আগুন নিভিয়ে দেওয়ার মতো নয়। তারা যদি যুদ্ধবিরতি কয়েক দিনের জন্য বাড়িয়ে দেয় এবং তারপর আবার হত্যাযজ্ঞ শুরু করে, তবে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এটাকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যায় না।’
গত শুক্রবার শুরু হওয়া চার দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার কথা আজ সোমবার। চুক্তির অধীনে তিন দিনে ইসরায়েলের কারাগার থেকে ১১৭ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বিপরীতে ৫৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস।