গাজায় যুদ্ধবিরতি: বিধ্বস্ত ঘরে ফিরছে ফিলিস্তিনিরা

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
5 মিনিটে পড়ুন

গাজায় যুদ্ধবিরতি: বিধ্বস্ত ঘরে ফিরছে ফিলিস্তিনিরা

কাতারের মধ্যস্থতায় অবশেষে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে। টানা সাত সপ্তাহের ইসরায়েলি গোলা ও বোমা বর্ষণে রক্তাক্ত, বিধ্বস্ত উপত্যকার মানুষ কিছুটা সময়ের জন্য হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পেল। এদিকে যুদ্ধবিরতির শর্তের অংশ হিসেবে হামাসের হাতে জিম্মি ১৩ ইসরায়েলি নারী ও শিশুকে গতকাল বিকেলে মুক্তি দিয়ে রেড ক্রসের মাধ্যমে মিসর হয়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে দেওয়া হয়। এর বিনিময়ে ৩৯ ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলের কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি ১০ থাই নাগরিক এবং একজন ফিলিপিনোও মুক্তি পেয়েছেন গতকাল। গাজায় স্থানীয় সময় গতকাল সকাল ৭টা থেকে চার দিনের সাময়িক যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। তবে শুরুর কয়েক মিনিট পর্যন্ত কিছু জায়গায় বিস্ফোরণ এবং হালকা অস্ত্রের গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়। এ ছাড়া কিছু সময় আগে পর্যন্ত ইসরায়েলের বিমান হামলাও চলে।

Untitled 8 1 গাজায় যুদ্ধবিরতি: বিধ্বস্ত ঘরে ফিরছে ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলি হামলায় নিহত কয়েকজনের মৃতদেহ গনকবর দেয়া হচ্ছে। ছবি সংগৃহীত

বেলা বাড়ার পর অস্ত্রের গর্জন থেমে গেলে অনেক ফিলিস্তিনি নিজের ঘরে ফিরতে শুরু করে। তবে বহু পরিবারের বাড়ি এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এদিকে দক্ষিণ গাজা ছেড়ে ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় না যাওয়ার জন্য বিমান থেকে প্রচারপত্র ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তারা বলেছে, এই যুদ্ধবিরতি সাময়িক এবং উত্তর গাজা এখনো যুদ্ধ এলাকা।

গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেও রাফাহ, খান ইউনিস শহরসহ বিভিন্ন স্থানে বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী।

- বিজ্ঞাপন -

ইসরায়েলিসহ ২৪ জিম্মি মুক্তি পেল

স্থানীয় সময় ৪টার কিছু পর মিসরীয় সূত্র বিবিসিকে জানায়, তাদের সরকারি কর্মকর্তারা রাফাহ ক্রসিংয়ে আন্তর্জাতিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের কাছ থেকে ইসরায়েলি জিম্মিদের গ্রহণ করেছেন। পরে মিসরের আল কাহেরা টিভিতে জিম্মিদের গাড়ি হাসপাতালে প্রবেশের দৃশ্য দেখানো হয়। ফুটেজে দেখা যায়, এক বৃদ্ধাকে হাসপাতাল ভবনে নেওয়া হচ্ছে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সার্জিক্যাল মাস্ক পরা কয়েকজন ব্যক্তি।

স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পাওয়া যায়, মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মিরা ইসরায়েলি ভূখণ্ডে পৌঁছে গেছে। এর আগে বিকেলে হামাস ১৩ ইসরায়েলিকে রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করে। তাদের গাজা থেকে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে মিসর নেওয়া হয়। হামাস ১০ জন থাই নাগরিককেও মুক্তি দিয়েছে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রথমে মুক্তি পেতে যাওয়াদের সংখ্যা ১২ বলে উল্লেখ করেছিলেন। কাতারের মধ্যস্থতায় এই জিম্মি মুক্তি সম্ভব হয়েছে।

Untitled 1 81 গাজায় যুদ্ধবিরতি: বিধ্বস্ত ঘরে ফিরছে ফিলিস্তিনিরা
একজন ইসরায়েলি সেনা অস্ত্র তাক করে আছেন। ছবি রয়টার্স

চার দিনে পর্যায়ক্রমে ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস এবং ১৫০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে ছাড়বে ইসরায়েল। হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া বলেছেন, তাঁরা চুক্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবেন এবং শর্ত অনুযায়ী জিম্মিদের মুক্তি দেবেন।

মুক্তির তালিকায় ৩৯ ফিলিস্তিনি

প্রথম দিনের ১৩ ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ৩৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা। তাদের মধ্যে রয়েছে নারী ও কয়েকজন কিশোর-তরুণ। মুক্তি দেওয়ার জন্য গতকালই তাদের উত্তর ইসরায়েলের দুটি কারাগার থেকে বের করে অধিকৃত পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি সামরিক আদালত কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর স্থানীয় সময় রাত পৌনে ৮টার দিকে সেখান থেকে দুটি বাস পশ্চিম তীরের দিকে রওনা হয়। তবে সেই বাসগুলোতে ফিলিস্তিনি বন্দিরা রয়েছে কি না, তা পরিষ্কার নয়। ৩৯ বন্দির অপেক্ষায় পশ্চিম তীরে জমায়েত ফিলিস্তিনিরা বিলম্ব দেখে এক পর্যায়ে হৈচৈ শুরু করে।

ছয় ট্রাক ত্রাণ গাজায়

এদিকে মিসর থেকে চিকিৎসা সরঞ্জাম, জ্বালানি ও খাদ্য সহায়তা নিয়ে ৬০টি ট্রাক গাজার পথে গেছে। মিসর বলেছে, এই চার দিনের মধ্যে গাজায় এক লাখ ৩০ হাজার লিটার ডিজেল এবং চার ট্রাক গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া সব মিলিয়ে প্রতিদিন ২০০ ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করবে।

- বিজ্ঞাপন -
Untitled 2 28 গাজায় যুদ্ধবিরতি: বিধ্বস্ত ঘরে ফিরছে ফিলিস্তিনিরা
ইসরায়েলি বোমা হামলার একটি দৃশ্য। ছবি রয়টার্স

এদিকে গতকাল ইসরায়েল সফরে যাওয়া ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ফিলিস্তিনি নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি বলেছেন, গাজাকে সহায়তা দিতে সব পথ খতিয়ে দেখছে যুক্তরাজ্য।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। এতে সেনাসহ এক হাজার ২০০ জন নিহত হয়। ২৪০ জনকে জিম্মি করে হামাস। এর জবাবে গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতিশোধের হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যার প্রায় অর্ধেকই শিশু।

শান্ত লেবানন সীমান্তও

এদিকে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তও শান্ত হয়ে পড়ে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে লেবাননের এই সীমান্তেও উত্তেজনা ছড়ায়। তখন থেকেই ইসরায়েলি বাহিনী ও লেবাননভিত্তিক ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি চলছে।

- বিজ্ঞাপন -

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!