গাজায় ২ শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৮২
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের দুই আশ্রয় শিবিরে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন ৮২ জন ফিলিস্তিনি। উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বার্তাসংস্থা এএফপিকে ওই কর্মকর্তা বলেন, শনিবার সন্ধ্যার দিকে গাজার আল ফাখুরা স্কুল শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর গোলা বর্ষনে অন্তত ৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই স্কুলটি জাতিসংঘের পরিচালিত। হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ বাঁধার পর স্কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা।
দুই শরণার্থী শিবিরে হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সংস্থাও (ইউএনওচা)। সংস্থার শীর্ষ নির্বাহী মার্টিন গ্রিফিথ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘নির্বিচারে শিশু, নারী ও বেসামরিক লোকজনের ওপর বোমা বর্ষণ খুবই হৃদয় বিদারক ঘটনা। তারা নিজেদের জীবন বাঁচাতে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। হামলাকারীদের প্রতি নিন্দা জানাচ্ছি।’
কাছাকাছি সময়েই গাজার উত্তরাঞ্চলীয় শহর জাবালিয়ার শরণার্থী ক্যাম্পে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলা বর্ষণে নিহত হয়েছেন এক পরিবারের ৩২ জন সদস্য। তাদের মধ্যে ১৯ জনই শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক।
এদিকে শনিবার গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল আল শিফা থেকে ডাক্তার,নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী ও হাসপাতাল চত্বরে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনিকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি স্থল বাহিনী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের হাসপাতাল ছাড়া সংক্রান্ত দৃশ্য ছড়িয়ে পড়েছে। সেসব দৃশ্যে অনেক অসুস্থ, আহত এমন কি হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া লোকজনকেও হাসপাতাল ছাড়তে দেখা গেছে।
তবে সবাইকে হাসপাতাল থেকে সরানো সম্ভব হয়নি। এখনও অন্তত ১২০ জন সংকটাপন্ন রোগী এবং বেশ কয়েক জন অপরিণত (প্রিম্যাচিউর) শিশু হাসপাতালটিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছে আল শিফা কর্তৃপক্ষ।
আল শিফায় কর্মরত আহমেদ এল মোখাল্লালাতি নামের এক চিকিৎসক শনিবার এক এক্স বার্তায় জানিয়েছেন, রয়ে যাওয়া রোগী ও শিশুদের দেখভাল করার জন্য তিনিসহ ৫ জন চিকিৎসক হাসপাতালে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলে প্রবেশ করে নির্বিচারে সামরিক-বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করে তারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে।
হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। ১৬ অক্টোবর থেকে তাতে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। সেই অভিযান এখনও চলছে।
হামাস যোদ্ধাদের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন। অন্যদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে নিহতের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।