হাসপাতাল চত্বর তছনছ করে জিজ্ঞাসাবাদের নামে মানসিক নির্যাতন করছে ইসরায়েলি বাহিনী

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
3 মিনিটে পড়ুন

হাসপাতাল চত্বর তছনছ করে জিজ্ঞাসাবাদের নামে মানসিক নির্যাতন করছে ইসরায়েলি বাহিনী

কয়েক দিন ধরে ইসরায়েলি ট্যাংক অবস্থান করছিল ফিলিস্তিনের গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার বাইরে। ট্যাংক থেকে হামলার কারণে হাসপাতালটির এক ভবন থেকে আরেক ভবনে পর্যন্ত যেতে পারছিলেন না রোগী, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীসহ আশ্রয়গ্রহণকারীরা। এরপর গতকাল বুধবার হাসপাতালটিতে প্রবেশ করে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।

এই অভিযানের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক জিহাদ আবু শানাব। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, হাসপাতাল চত্বরে যাঁরা ছিলেন তাঁদের নিষ্ঠুরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন ইসরায়েলি সেনারা। তাঁদের মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছিল। এই ফিলিস্তিনিরা ভীত, সন্ত্রস্ত ছিলেন।

হাসপাতাল চত্বর তছনছ করে জিজ্ঞাসাবাদের নামে মানসিক নির্যাতন করছে ইসরায়েলি বাহিনী
আল-শিফা হাসপাতালের সামনের একটি দৃশ্য। ছবি রয়টার্স

ফোনকলে এই সাংবাদিক আরও বলেন, গত মঙ্গলবার রাত থেকে দুঃস্বপ্নের মতো সবকিছু হচ্ছে। হাসপাতাল চত্বর তছনছ করার আগে ইসরায়েলি বাহিনী জেনারেটর, যোগাযোগ স্থাপনের সবকিছু নষ্ট করেছে। এই হাসপাতাল থেকে এখন বাইরের বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ করার উপায় নেই।

সাংবাদিক জিহাদ আবু শানাব বলেন, মঙ্গলবার পুরো রাতই বিশৃঙ্খলা চলে এই হাসপাতালে। সকাল না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলি গুলিবর্ষণও চলে। যাঁরা হাসপাতালে ছিলেন, তাঁরা দেখেছেন ইসরায়েলি বাহিনী কীভাবে হাসপাতালটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর নিষ্ঠুর জিজ্ঞাসাবাদের ধরন প্রসঙ্গে এই সাংবাদিক বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী সবাইকে একটি তলায় জড়ো হতে বলেন। এরপর ইসরায়েলি সেনারা নিচের তলায় অনুসন্ধান চালান এবং জিজ্ঞাসাবাদের নামে হেয়প্রতিপন্ন করা হয় ফিলিস্তিনিদের।

- বিজ্ঞাপন -

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে এই সাংবাদিক আরও বলেন, আল-শিফায় ইসরায়েলি সেনারা যখন অভিযান চালান, তখন কোনো ধরনের প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হয়নি তাঁদের। হাসপাতালটিতে কেবল রোগী, চিকিৎসক ও আশ্রয়গ্রহণকারীরাই রয়েছেন।

হাসপাতাল চত্বর তছনছ করে জিজ্ঞাসাবাদের নামে মানসিক নির্যাতন করছে ইসরায়েলি বাহিনী
বুধবার ইসরায়েলি সেনারা জোরপূর্বক গাজার আল-শিফা হাসপাতালে প্রবেশ করে। ছবি রয়টার্স

এদিকে, গাজার খান ইউনিস থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন, গুলিবর্ষণ ও কামানের ভারী গোলাবর্ষণের পাশাপাশি আল-শিফা হাসপাতালের মূল ভবনে অভিযান চালান ইসরায়েলি সেনারা। এ সময় জরুরি বিভাগ, বিশেষায়িত সার্জারি বিভাগ, এমনকি প্রসূতি ওয়ার্ডেও অভিযান চালানো হয়। এক কক্ষের পর আরেক কক্ষ—করিডরের পর করিডর ধরে অভিযান চালান তাঁরা। চিকিৎসক এবং চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

হামাসের নেতা কিংবা সদস্যরা তাঁদের অভিযান চালাতে আল-শিফা হাসপাতাল ব্যবহার করেন—এই অভিযোগ তুলে ইসরায়েলি বাহিনী সেটি অবরুদ্ধ এবং এরপর অভিযানে যায়। কিন্তু এই অভিযানের পক্ষে কোনো জোরালো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি তারা।

হাসপাতাল চত্বর তছনছ করে জিজ্ঞাসাবাদের নামে মানসিক নির্যাতন করছে ইসরায়েলি বাহিনী
ইসরায়েলি বাহিনী জেনারেটর, যোগাযোগ স্থাপনের সবকিছু নষ্ট করেছে। ছবি রয়টার্স

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হাসপাতালটির মূল ভবনের একাধিক দরজায় বৈদ্যুতিক তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইসরায়েলি সেনারা যখন একে একে চিকিৎসক, রোগী, আহত ব্যক্তি, আশ্রিতদের ডাকছিলেন, তাঁদের প্রত্যেককে এই তল্লাশিচৌকি পেরিয়েই যেতে হয়েছে।

ধারণা করা হয়, অভিযান চলাকালে হাসপাতালটিতে প্রায় তিন হাজার লোক ছিলেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, অভিযানের সময় সেখানে প্রায় আড়াই হাজার লোক ছিলেন। এর মধ্যে নবজাতক ৩৬টি এবং আহত ব্যক্তি প্রায় ৬০০ জন।

- বিজ্ঞাপন -

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!