বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচন ৭ই জানুয়ারি
বাংলাদেশে আগামী বছরের সাতই জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ তারিখ ৩০শে নভেম্বর।
বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে এই ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
ভাষণে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ থাকার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করা হবে বলে তিনি বলেছেন।
নির্বাচন কমিশন এই তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিলো এমন সময়ে যখন নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ চরম অবস্থায় রয়েছে।
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে পঞ্চম দফার মতো অবরোধ পালন করছে বিএনপি ও তার সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার ভাষণে বলেছেন, কমিশনের দায়িত্ব নেবার পর থেকে তারা বিভিন্ন পক্ষের সাথে একাধিকবার আলোচনা করেছেন।
রাজনৈতিক দলগুলোকেও একাধিকবার আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন।
“নিবন্ধিত অনাগ্রহী সকল রাজনৈতিক দলকেও একাধিকবার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তারা আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন।”
সংসদের মেয়াদপূর্তির পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে – একথা উল্লেখ করে মি. আউয়াল বলেন, কমিশন সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার জন্য দায়িত্ব পালন করবে।
সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশ নেবার আহবান জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে কার্যকরভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়, নির্বাচন অধিক পরিশুদ্ধ ও অর্থবহ হয়।”
এর মধ্যেই বাংলাদেশের বড় তিনটি দলকে চিঠি দিয়ে ‘পূর্বশর্ত ছাড়া’ সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। এর আগে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনে তাগিদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং বাধা দানকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞার দেয়ার মতো ঘোষণাও দিয়েছে।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক মহল থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানানো হলেও সেরকম সম্ভাবনা খুব কম।
মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ – ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩
মনোনয়নপত্র বাছাই – ১লা থেকে ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩
আপিল – ৬ই থেকে ১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৩
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার – ১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৩
প্রতীক বরাদ্দ – ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৩
প্রচারণা – ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৩ থেকে ৫ই জানুয়ারি, ২০২৪
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য অনূকৃল রাজনৈতিক পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন মি. আউয়াল।
তিনি বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রে মতাদর্শগত বিভাজন থাকতেই পারে। কিন্তু সেটি ছাপিয়ে যদি পরিস্থিতি যদি সহিংস হয় তাহলে বিষয়টি নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
তিনি মনে করেন, সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে এ পরিস্থিতির সমাধান করা অসাধ্য নয়।
সব উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও অস্বস্তি কাটিয়ে জনগণকে নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আহবান জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার।