হামাসের সঙ্গে সংঘাতে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে বাড়ছে উত্তেজনা
হামাসের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যে ইসরায়েল ও লেবানন সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে। হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি সেনাদের মধ্যে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সহিংসতা বেড়েছে। আর এ থেকে যুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা। সোমবার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত কয়েকদিনে ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে সংঘাত বেড়েছে। এ থেকে যুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এদিকে সোমবার ইসরায়েলি হামলায় লেবাননের দুজন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েল বলছে রোববার লেবাননের হামলায় ইসরায়েলের ইলেকট্রিক কোম্পানির বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সোমবার একজন নিহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েল বলছে, তারা উত্তর ফ্রন্টে যুদ্ধ চায় না। তাদের লক্ষ্য হামাসকে ধ্বংস করা। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা চায় না সংঘাত ছড়িয়ে পড়ুক। ইরানকে এই সংঘাত থেকে দূরে রাখতে এরই মধ্যে দুটি বিমানবাহী রণতরি পাঠানো হয়েছে।
হিজবুল্লাহ নেতা নাসরাল্লাহ শনিবার বলেছেন, লেবানন ফ্রন্ট সক্রিয় থাকবে এবং তাদের কাজের গতিতে বেশি উন্নতি এসেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার হিজবুল্লাহকে তাদের হামলা না বাড়ানোর জন্য সতর্ক করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আগুন নিয়ে তারা খেলা করছে। আগুনের জবাব দেওয়া হবে আরও শক্তিশালী আগুন দিয়ে।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে রেড লাইন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আপনি যদি শোনেন যে আমরা বৈরুত আক্রমণ করেছি, আপনি বুঝতে পারবেন যে নাসরাল্লাহ সেই রেখাটি অতিক্রম করেছেন।
এদিকে লেবাননের মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডরোথি শিয়া ম্যারোনাইট গোষ্ঠীপ্রধান আল রাহির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সব জায়গায় লেবাননের স্থিতিশীলতা চায় তবে গাজা যুদ্ধে তাদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে আসছে।
৮ অক্টোবর থেকে দুই সীমান্তেই চলছে গোলাগুলি। লেবাননের সীমান্ত শহর আইনতাতে একটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে একজন বেসামরিক নিহত ও একজন আহত হয়েছেন।
ইসরায়েল সামরিক বাহিনী আইডিএফ সীমান্তের গ্রাম ইয়ারুন সফর করার সময় সীমান্ত সফরে থাকা সংবাদকর্মীদের ওপর বোমা হামলা করে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রবিবার হিজবুল্লাহ দোলেভ ফাঁড়িকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে একজন ইসরায়েলির মৃত্যু হয়েছে।
রাশিয়ান সম্প্রচারমাধ্যম আরটি ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের বিমান বাহিনীর কমান্ডার আমির আলী হাজিজাদেহকে উদ্ধৃত করে বলেছে, যুদ্ধ প্রসারিত হয়েছে এবং সংঘর্ষের মাত্রা আরও বাড়তে পারে।
২০০৬ সালে ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে এক মাস যুদ্ধ চলে। ওই ঘটনায় ৭০ জনের বেশি হিজবুল্লাহ যোদ্ধা ও ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। অন্যদিকে সাত সেনাসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়।