গাজার দুটি বৃহত্তম হাসপাতাল বন্ধ, ৬ শিশুর মৃত্যু
গাজার আল-শিফা হাসপাতালে আরো এক অপরিণিত বা প্রিম্যাচিউর শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত মোট ৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সোমবার বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতালটি সম্পূর্ণভাবে অবরোধের পর জ্বালানী ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে। ফলে শিশুদের ইনকিউবেটর বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে চিকিৎসকরা।
এ ছাড়া গাজার দুটি বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফা এবং আল-কুদস দুটোই বন্ধ হয়ে গেছে। ইসরায়েলি বন্দুকধারীরা আল-শিফা হাসপাতালের কাছে যাকে দেখছে, তাকেই লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে যাচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ হাসপাতালে ভিতরে আটকে পেড়েছে।
গাজার উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউসুফ আবু রিশ সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, বিদ্যুৎ ঘাটতি হাসপাতালে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।
মোট চয় শিশু এবং নয়জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ইসরায়েলি সৈন্যরা হাসপাতালটিকে ঘিরে ফেলায় কয়েকশ রোগী আটকা পড়ে ভিতরে এবং হাজার হাজার মানুষ গাজার বৃহত্তম হাসপাতালের চারপাশে আশ্রয় নিয়েছে।
স্থানীয় সময় রবিবার হাসপাতালের প্রত্যক্ষদর্শীরা সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী হাসপাতালের চারপাশে মারাত্মক হামালা চালিয়েছে। গোলাগুলি এবং বোমা হামলার শব্দগুলো হাসপাতালের প্রাঙ্গনজুড়ে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল।
আল-শিফার সার্জারির প্রধান ডাঃ মারওয়ান আবু সাদা বিবিসিকে বলেছেন, সরঞ্জাম ও বিদ্যুৎ এর অভাবে অপরিণত নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। যেসব শিশু আগে ইনকিউবেটরে ছিল তাদের আল-শিফা হাসপাতালে বিদ্যুতের অভাবের কারণে একসঙ্গে সার্জিক্যাল ওয়ার্ডের একটি বিছানায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অন্যান্য কয়েক ডজন নবজাতক বর্তমানে তাদের প্রয়োজনীয় যত্ন পাচ্ছে না। চিকিৎসকরা আতঙ্কে আছেন। তারা বলছেন, ‘আমরা সব (শিশুদের) জীবন হারাতে যাচ্ছি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা বলেছে, প্রায় ৩ হাজার রোগী এবং কর্মী পর্যাপ্ত জ্বালানী, পানি বা খাবার ছাড়াই হাসপাতালে ভিতরে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লুএইচও)-এর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস গাজার হাসপাতালগুলোর ‘ভয়াবহ এবং বিপজ্জনক’ পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। এলাকায় ক্রমাগত বন্দুকযুদ্ধ এবং বোমা হামলার কারণে ইতিমধ্যেই জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অপরিণিত বা প্রিম্যাচিউর শিশুসহ আরো অনেক রোগী দুঃখজনকভাবে মারা যাচ্ছে।
গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালটি পাঁচ সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া এই অঞ্চলের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলের অনবরত বোমা হামলায় গাজায় কমপক্ষে ১১ হাজার ১৮০ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ৪ হাজার ৬০৯ শিশু রয়েছে। গাজায় ইসরায়েলের নেওয়া পদক্ষেপগুলোকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ‘সম্মিলিত শাস্তি’ হিসাবে বর্ণনা করেছে। যা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে যুদ্ধাপরাধ।
সূত্র: আল জাজিরা